• শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন, ৩ দিনের সন্তানকোলে SSC পরীক্ষাকেন্দ্রে ডায়মন্ড হারবারের বধূ
    প্রতিদিন | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সদ্যই মা হয়েছেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে রবিবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে সরাসরি পরীক্ষাকেন্দ্রে যান সংখ্যালঘু পরিবারের বধূ মাসুদা। কোলে তাঁর তখন তিনদিনের সদ্যোজাত সন্তান। সঙ্গে আসা স্বামী ও মায়ের কাছে নবজাতককে রেখে বেশ নিশ্চিন্তেই পরীক্ষা দেন তিনি।

    ডায়মন্ড হারবারের চাঁদনগরের বাসিন্দা মাসুদা খাতুন। সংখ্যালঘু পরিবারের কন্যা মাসুদার কাছে উচ্চশিক্ষায় কখনও কোনও বাধা আসেনি বাড়ি থেকে। বরং উচ্চশিক্ষা অর্জনে অভিভাবকদের সম্পূর্ণ সমর্থনই পেয়ে এসেছেন তিনি বরাবর। জীববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে এমএসসি করেছেন। এখন লক্ষ্য স্কুলশিক্ষিকা হওয়ার। বিয়ে হয়েছে উস্তির দেউলার বাসিন্দা আমজাদ ফকিরের সঙ্গে। নিজের বাড়ির মতোই পড়াশোনার ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়িতেও ছিল না কোনও বাধা। বরং স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের উৎসাহেই মাসুদা স্কুলশিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নেন।

    অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। যদিও পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ঢিলে দেননি কোনওভাবেই। প্রসবযন্ত্রণা সহ্য করেই এসএসসির প্রস্তুতিতে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। মাত্র তিনদিন আগেই মা হয়েছেন মাসুদা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে রবিবার সেই তিনদিনের সদ্যোজাতকে কোলে নিয়েই স্বামী ও মায়ের সঙ্গে এসে হাজির হন ডায়মন্ডহারবার ভারত সেবাশ্রম সংঘ প্রণব বিদ্যাপীঠ পরীক্ষাকেন্দ্রে। সন্তানকে কোলে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে বসেই মাসুদা বলেন, “এবারই প্রথমবার এসএসসি পরীক্ষায় বসছি। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি। তিনদিনের সন্তানকে কোলে নিয়ে এসেছি পরীক্ষা দিতে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি বলেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। আশা করছি, সফল হব।” মাসুদার স্বামী আমজাদ জানান, “প্রসবযন্ত্রণা সহ্য করেও পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে মাসুদা। মনেপ্রাণে চাই, ওর স্কুলশিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন যেন সত্যি হয়।” নবজাতককে স্বামীর কাছে নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে রেখে মা ও স্বামীর আশীর্বাদ নিয়ে স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে হাসিমুখে এদিন পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে যান মাসুদা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)