আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেরালায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। থ্রিসুর জেলার এক নতুন হেফাজতে কর্মীকে চরম নির্যাতনের ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। খবর অনুযায়ী, ঘটনাটা ঘটে পিচি থানার ভেতরে। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ সদস্যদের এক রেস্তোরাঁ কর্মীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে দেখা গিয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে শোরগোল স্থানীয়দের মধ্যে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের মে মাসে। তবে এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসে ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে। সেই সময়ে থ্রিসুরের ব্যবসায়ী ও লালিস গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে পি ওসেপ তথ্য অধিকার আইনের (RTI) মাধ্যমে এটি সংগ্রহ করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
এর প্রেক্ষিতে ওসেপ জানান, পালক্কাডের ধিনেশ নামে এক ব্যক্তি পট্টিকাড এলাকায় একটি রেস্তোরাঁয় কিছু কর্মীর সঙ্গে আচমকা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পিচি থানার সাব-ইন্সপেক্টর (SI) রতীশ রেস্তোরাঁর ম্যানেজার রনি ও আরেক কর্মচারীকে থানায় ডেকে এনে তাঁদের উপর চরম শারীরিক নির্যাতন চালান হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এস আই -এর কেবিনে রনিকে চড় মারা হচ্ছে এবং অপর এক পুলিশ সদস্য রনির সঙ্গীকেও মারধর করছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে ওসেপ ও তাঁর ছেলে পল জোসেফ থানায় যান৷ এরপর পুলিশ পলকে রেস্তোরাঁ কর্মচারীদের সঙ্গে লকআপে আটকে রাখে দীর্ঘক্ষণ। পাশাপাশি ওসেপকে এক ‘সমঝোতা’ করতে বলে। ওসেপ অভিযোগ করেন, সাব ইন্সপেক্টর রতীশ তাঁকে তাঁর ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। ওই রেস্তোরাঁয় ধিনেশের নাবালক ছেলের উপস্থিতির অজুহাতে ভুয়ো মামলা দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন। শুধু তাই নয়। তিনি আরও জানান, এই নির্যাতনে সিভিল পুলিশ অফিসার মাহেশ এবং সাব ইন্সপেক্টর জয়েশ-ও জড়িত ছিলেন।
ঘটনার জেরে ওসেপ অভিযোগ করেন, আগের এক ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণেই পুলিশ এভাবে প্রতিহিংসা নিচ্ছে। থানার এক পুলিশ সদস্যের বোনের মেয়েকে তাঁর দোকান থেকে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ার পর থেকেই পুলিশ তাঁর উপর ক্ষুব্ধ ছিল। ঘটনার সূত্রপাত হয় তখন থেকেই।
পরে এক ‘সমঝোতার’ অংশ হিসেবে ধিনেশের পক্ষকে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এর পর ধিনেশ থানায় ফিরে গিয়ে তাঁর অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। যদিও ধিনেশ পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হন। তবে জানা গিয়েছে তিনি দ্রুত জামিন পান। এমনকী ঘুষের টাকাও উদ্ধার করা যায়নি।
ওসেপ আইনি পথে বিষয়টি অনুসরণ করেন এবং RTI-এর মাধ্যমে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে আবেদন করেন। যদিও শুরুতে 'নারী সুরক্ষা' ও 'মাওবাদী কারণ'-এর মতো যুক্তিতে তাঁর আবেদন খারিজ করা হয়, শেষপর্যন্ত কেরালা রাজ্য তথ্য কমিশন ২০২৪ সালের অগাস্টে ফুটেজ প্রকাশের নির্দেশ দেয়।
প্রসঙ্গত এই ঘটনাটির সঙ্গে থ্রিসুরেরই আরেকটি ঘটনার মিল রয়েছে। এই ঘটনাটিও ২০২৩ সালে ঘটে৷ সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কুন্নামকুলাম থানায় যুব কংগ্রেস নেতা ভি এস সুজিথ-এর উপর পুলিশি নির্যাতনের সিসিটিভি ফুটেজ আর টি আই ( RTI) -এর মাধ্যমে প্রকাশ পেলে চার পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।