টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শুরু, তিন সদস্যের কমিটি গঠনের ঘোষণা ফেডারেশনের, নেতৃত্বে প্রাক্তন বিচারপতি...
আজকাল | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) তাদের নতুন বাণিজ্যিক অংশীদার নির্বাচনের জন্য পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া তদারকি করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। ফেডারেশনের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রাক্তন বিচারপতি নাগেশ্বর রাও এই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। গত ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আদেশে এআইএফএফ সংক্রান্ত মামলার শুনানির পাশাপাশি ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL) আয়োজনে সবুজ সংকেত মেলে। উল্লেখ্য, চুক্তি নবীকরণ না হওয়ায় গত ১১ জুলাই থেকে আইএসএলের আয়োজক সংস্থা এফএসডিএল লিগের আয়োজন স্থগিত রেখেছিল।
রবিবার এআইএফএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “বাণিজ্যিক অংশীদার নির্বাচনের প্রক্রিয়া তদারকির জন্য কার্যনির্বাহী কমিটি তিন সদস্যের বিড ইভ্যালুয়েশন কমিটি (BEC) গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর চেয়ারম্যান পদে থাকছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মাননীয় এল নাগেশ্বর রাও।” কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন এএফসি-র অডিট ও কমপ্লায়েন্স কমিটির সদস্য কেশভারন মুরুগাসু এবং এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে। সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছিল, বিচারপতি রাও প্রয়োজনে এক বা দুজন পেশাদারকে নিয়োগ করতে পারবেন তাঁকে সাহায্য করার জন্য। জানা গিয়েছে, শনিবার ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এআইএফএফ কার্যনির্বাহী কমিটি এই সিদ্ধান্ত নেয়।
সেই সঙ্গে অক্টোবর ২৫ থেকে নভেম্বর ২২ পর্যন্ত ধাপে ধাপে সুপার কাপ আয়োজনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রতিযোগিতা একাধিক স্তরের ক্লাবগুলির জন্য উন্মুক্ত। যদিও বাণিজ্যিক অধিকারের মেয়াদ নিয়ে এখনও অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে। অনুমান করা হচ্ছে, নতুন চুক্তি বহু বছরের চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসারে। এছাড়া এআইএফএফের টাস্ক ফোর্স কমিটি, যা চলতি বছরের ৭ এপ্রিল মাস্টার রাইটস এগ্রিমেন্ট (MRA) নিয়ে গঠিত হয়েছিল, পেশাদার পরিষেবা সংস্থার সুপারিশ পর্যালোচনার জন্য টেন্ডার কমিটি হিসেবেই কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ফেডারেশন। উল্লেখ্য, অক্টোবরে সুপার কাপের বল গড়াবে। ২৫ অক্টোবর শুরু হবে সুপার কাপ। ফাইনাল ২২ নভেম্বর।
ধাপে ধাপে হবে এই টুর্নামেন্ট। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এমনটাই জানিয়েছে। আর সুপার কাপের দিনক্ষণ ঘোষিত হওয়ায় মনে করা হচ্ছে ভারতীয় ফুটবল ধীরে ধীরে স্বাভাবিকত্ব ফিরে পাচ্ছে। অচলাবস্থার কাটার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আগের দিন ফেডারেশনের নির্বাচনের উল্লেখ করা হয়েছিল। সংবিধান বদলের পর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার এই বিষয়ে কিছু জানায়নি সুপ্রিম কোর্ট। আদৌ শেষপর্যন্ত নির্বাচন হবে কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। এদিকে, আইএসএল স্থগিত হওয়ার ফলে বিপাকে পড়েছে আইএসএলের ১৩টি ক্লাবের মধ্যে ১১টি। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ না হলে তাদের উপর বিরাট ‘প্রভাব’ পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি কয়েকটি ক্লাব ইতিমধ্যেই অস্থায়ীভাবে নিজেদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত এপ্রিল মাসে দেওয়া আগের নির্দেশের থেকে ভিন্ন। তখন আদালত ভারচীয় ফুটবল ফেডারেশনকে জানিয়েছিল, নতুন সংবিধান নিয়ে আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত এফএসডিএলের সঙ্গে আর কোনও আলোচনা চালানো যাবে না। কিন্তু এদিন আদালতের সর্বশেষ নির্দেশে অনুযায়ী দুই পক্ষকেই যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার মাধ্যমে সংকট কাটিয়ে ওঠার বার্তা দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের আগে আইএসএল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নির্বাচনের পর যে দলই জিতুক না কেন ডিসেম্বরের মধ্যে আইএসএল শুরু করতে হবে। ফেডারেশনের সঙ্গে এফএসডিএলের বৈঠকে এমনই প্রস্তাবিত করা হয়েছিল।
সেদিনও মাস্টার রাইটস নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বর্তমান চুক্তির শেষ কিস্তি, অর্থাৎ ১২.৫ কোটি অবিলম্বে ফেডারেশনকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানানো হয়, নির্বাচনের পর নতুন কমার্শিয়াল পার্টনারের জন্য টেন্ডর দেওয়া হবে। স্বত্ব ছেড়ে দিতে রাজি ছিল এফএসডিএল। ন্যাশনাল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট কোড মেনে হবে গোটা বিষয়টি। কোনও একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে পুরো বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হবে। পুরো প্রক্রিয়া ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে যৌথ প্রস্তাব রেখেছিল এআইএফএফ এবং এফএসডিএল। ফেডারেশনের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেলে আইএসএলের নামও বদলে যেতে পারে। আগেই জানানো হয়েছিল সুপার কাপ দিয়েই শুরু হবে মরশুম। এদিন ফেডারেশন সেটাই নিশ্চিত করল। ক্লাবগুলোও টুর্নামেন্টে নামার জন্য সময় পেয়ে যাচ্ছে।