• ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় মর্মান্তিক পরিণতি! দিল্লিতে ‘খুন’ মুর্শিদাবাদের যুবক
    প্রতিদিন | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি বাংলার যুবকের। ধারের টাকা ফের চাওয়ায় তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। দিল্লির শন্তনগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর। শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকায় পরিবারের কাছে ছেলের মৃত্যুর খবর আসে। তাঁর মৃত্যুর নেপথ্যে কারখানার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম হাবিব শেখ, বয়স ৩০ বছর। তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার পুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দেহ গ্রামে ফেরার অপেক্ষায় পরিবারের সদস্যরা। মৃত হাবিবের বাবা, সানিফ রহমান জানিয়েছেন, “আমার ছেলে ৫ বছর ধরে দিল্লিতে রয়েছে। প্রথমে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে শন্তনগর এলাকায় একটা মেডিক্যাল সরঞ্জাম তৈরির কারখানায় কাজ করত। তিন বছর ওখানেই কাজ করেছে। থাকত কারখানায় পাশে। পরে দু’বছর ধরে নিজেই একটা মেডিক্যাল সরঞ্জাম তৈরির কারখানায় খোলে স্থানীয় সহকর্মীদের সহযোগিতায়। ব্যবসা ভালোই চলছিল। কারখানার কাছে একটা ঘরে হাবিব-সহ আরও চারজন কারখানার কর্মী থাকত।”

    বাবা আরও জানিয়েছেন যে চারজন কর্মী হাবিবের সঙ্গে থাকতেন, তারা ৬ মাস আগে একলক্ষ টাকা ধার নেন। আগস্টে মাসে ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। ধারের সেই টাকা ফেরত না দেওয়ায় হাবিব তাঁদের বারবার তাদের তাগাদা দিচ্ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার, টাকা ফেরত দেওয়ার চূড়ান্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। সানিফ রহমান বলেন, ”বৃহস্পতিবার ফোনে ছেলে আমাকে সব জানিয়েছিল। শুক্রবার ছেলে ফোন করেনি। শনিবার ছেলের কারখানার অপর শ্রমিকরা আমাকে ফোনে জানায় যে ৪-৫ জন মিলে হাবিবকে নির্মমভাবে মারধর করে। মারধরের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, তার সারা শরীরে কালচে ও নীলচে দাগ পড়ে যায়। শুক্রবার রাতে দেহ উদ্ধার হয় কারখানার পাশের একটা জঙ্গল থেকে। শনিবার রাতে দিল্লির পুলিশ ও কারখানার অপর কর্মীরা আমাদের মৃত্যুর খবর দেয়। ছেলের সাথে একই ঘরে থাকা চার জনের খোঁজ নেই।”

    শুক্রবার রাতে দেহ উদ্ধার হলেও ভয়ে কারখানা অপর শ্রমিকরা মুখ খুলতে পারেনি। শনিবার দিল্লির পুলিশ ও কর্মীরা আমাদের খবর দেয়। পরিবারের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। স্থানীয় পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এলাকার বাসিন্দা সুরজ শেখ জানিয়েছেন, “হাবিব খুব ভালো ছেলে। গ্রামে থেকে তেমন রোজগার হচ্ছিল না বলে ৫ বছর আগে দিল্লি গিয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে। আস্তে আস্তে ওখানে শন্তনগর এলাকায় মেডিক্যাল সরঞ্জাম তৈরির কারখানা শুরু করে। ১৬ জন ওর কারখানায় কাজ করত। এখন শোনা যাচ্ছে, কর্মীদের টাকা ধার দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়। শনিবার রাতে দিল্লি পুলিশ ও কারখানার অপর কর্মীরা ফোনে বাড়িতে খবর দেয়।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)