আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওড়িশায় হাড়হিম কাণ্ড। নায়াগড় জেলার একটি মাদ্রাসায় ১২ বছরের এক ছাত্রকে নৃশংস হত্যার অভিযোগে ওই প্রতিষ্ঠানেরই পাঁচজন তরুণ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ৭ ঘটনাটি ঘটে৷ নায়াগড় জেলার রণপুর থানার অন্তর্গত এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানান স্থানীয় জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র পণ্ডা। সম্প্রতি এই ঘটনা ঘিরে হুলুস্থুল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ২ সেপ্টেম্বর। নিহত ছাত্র নিখোঁজ ছিল। কোনওভাবেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর, পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে এবং তদন্ত শুরু করে। এরপর শনিবার অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রকে আটক করে পুলিশ৷ খবর অনুযায়ী তাদের প্রত্যেকের বয়স ১২ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নিহত ছাত্র কটকের বাদাম্বা এলাকার বাসিন্দা ছিল। সে ওই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তাকে মাদ্রাসার এক সিনিয়র ছাত্র যৌন নির্যাতন করে আসছিল বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তা-ই নয়, জানা গিয়েছে অভিযুক্ত আরও কয়েকজন ছাত্র ও অন্য জুনিয়রদের উপরও একইভাবে যৌন নিপীড়ন চালাত। নিহত ছাত্রটি এসব অভিযোগ ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিলে, তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
এর আগেও ৩১ অগাস্ট ছাত্রটির উপর হত্যাচেষ্টা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা। পরে ২ সেপ্টেম্বর তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এমনকী তার দেহ একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়।
প্রথমে দেহ উদ্ধারের পর এটি দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও, পরবর্তীতে তদন্তে উঠে আসে যে এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠান হয়৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত প্রমাণ অনুযায়ী নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মৃত্যুর আগে ওই ছাত্র শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে এক সিনিয়র ছাত্র এবং আরও একজন যৌন নির্যাতনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। মোট পাঁচজন মিলে তাকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই হত্যা মামলা, একজনের বিরুদ্ধে হত্যা ও পকসো (POCSO) আইনে মামলা এবং আরেকজনের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে৷
পরবর্তীতে, অভিযুক্তদের স্থানান্তর করা হয়েছে অঙ্গুল জেলার একটি কিশোর সংশোধনাগারে। ঘটনার জেরে বর্তমানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একইসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছে যাতে দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পায় এবং ভুক্তভোগী ছাত্রের পরিবারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। এছাড়াও অন্যান্য দিকও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷