বান এলেই ভাসে কালীঘাট, চত্বর স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী কলকাতা পুরসভা
বর্তমান | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গঙ্গায় বান এলেই ভাসে কালীঘাট অঞ্চলের একাধিক রাস্তা। বর্ষার জল জমে থাকলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। টালিনালায় একটি ব্যারাজ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। পাশাপাশি, তৈরি হবে একটি নিকাশি পাম্পিং স্টেশনও। এই কাজের জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৩৪ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। আজ, সোমবার পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে এই প্রকল্পে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়তে চলেছে বলে খবর। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুজোর পরেই শুরু হয়ে যাবে কাজ।
এর আগে একাধিকবার পুরসভার মাসিক অধিবেশনে টালিনালার বেহাল দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংলগ্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলাররা। জুঁই বিশ্বাস, রত্না দে নাগ, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায়রা বারবার এনিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় টালিনালায় পলি তোলার কাজ শুরু হয়। ফলে কালীঘাট চত্বরে একটু বৃষ্টিতেই জল জমার সমস্যা অনেকাংশে কমেছে। কিন্তু বানের সময় কালীঘাটের বিভিন্ন অলিগলি জলের তলায় চলে যায়। সবচেয়ে বেশি ভোগে ৮৩ নম্বর ওয়ার্ড। ৭৩ এবং ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডেও ভরা কোটালের সময় জল উঠে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে। কালীঘাট রোড থেকে টালিগঞ্জ রোড, কালীঘাট বাজার, বড় গলি, চক্রবর্তীপাড়া, মায়ের সদরঘাট, মেটে গলি, মিষ্টি গলি, গদার মাঠ, নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট ফার্স্ট লেন সহ কালীঘাট মন্দির চত্বরের একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়। অনেকের ঘরেও জল ঢুকে যায়।
এই পরিস্থিতি বদলাতে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বাধীন পুরবোর্ড ঠিক করেছে, টালিনালা ও গঙ্গার সংযোগস্থল দইঘাটে ব্যারাজ তৈরি করা হবে। প্রায় ২৫ ফুট উঁচু ও ৪২ মিটার দীর্ঘ হবে ব্যারাজটি। সেই সঙ্গে তৈরি হবে একটি পাম্পিং স্টেশন। আগে এই প্রকল্প নিকাশি বিভাগের হাতে থাকলেও বর্তমানে সেই কাজ পুরসভার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ করছে। কেন্দ্রের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা খাতে পাওয়া ৫০০ কোটি টাকা থেকেই কাজ হবে।
এক অফিসার বলেন, ‘কোটালের সময় গঙ্গার জলস্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। বৃষ্টি হলে তা আরও বাড়ে। সেই জলই আদি গঙ্গা উপচে আশপাশের এলাকা ভাসায়। তাই বাঁধ দিয়ে জল আটকানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বানের সময় ব্যারাজের গেট বন্ধ রাখলে গঙ্গার জল আর টালিনালায় ঢুকতে পারেব না। ভাটার সময় খুলে দেওয়া হবে ব্যারাজের গেট। বিশেষ করে বর্ষাকালে জোয়ারের সময়ও ব্যারাজের গেট বন্ধ রাখা হবে। তখন টালিনালার জল পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘জল নেমে গলে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। কাদা, আবর্জনায় দুর্গন্ধে তখন টেকা দায়। অবশেষে কালীঘাট অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্বস্তি মিলতে চলেছে।’ ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ব্যারাজ ও পাম্পিং স্টেশন হয়ে গেলে উপকৃত হবেন টালিনালা সংলগ্ন সবক’টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা।’