পিচ, খোয়া উঠে রাস্তায় তৈরি হয়েছিল বড় বড় গর্ত। সেই রাস্তা মেরামতির জন্য পেভার ব্লক এনে রাখা হয়েছিল রাস্তার পাশে। কিন্তু সামান্য মেরামতির পরেই পেভার ব্লক রাতারাতি উধাও হয়। অভিযোগ, তার জেরে বন্ধ হয়ে যায় মেরামতির কাজ। শেষে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা ফের পেভার ব্লক ফেলে কাজের জন্য। কিন্তু দিনেদুপুরে রীতিমতো ট্রাক দাঁড় করিয়ে কয়েক জন যুবক সেগুলিও তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীদের দাবি, তৃণমূলের এক নেতার নির্দেশে এই কাণ্ড। যদিও তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে। ঘটনার ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হলেও ভাঙা রাস্তা আর মেরামত করা হয়নি। জমা জলের নীচে লুকিয়ে থাকা গর্তের জেরে যানবাহনের গতি কমে গিয়ে যানজট হয়েছে নিত্যদিনের ঘটনা।
এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার বাঁকড়া বাজারে, হাওড়া-আমতা রোডে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, হাওড়া-আমতা রোডে প্রতি বর্ষাতেই জল জমে। তার দোসর হয় ভাঙাচোরা, ভয়াবহ রাস্তা। শেখ সাদিক আলি নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘প্রায় ১০০ মিটার ভাঙা এই রাস্তার জন্য সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যানজট হয় সলপ হাই রোড থেকে স্থানীয় জাপানি গেট পর্যন্ত দু’কিলোমিটার রাস্তায়। প্রশাসনকে বলেও ফল হয়নি।’’
সম্প্রতি কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে ছ’লেনের এলিভেটেড করিডরের কাজ শুরু হলে হাওড়া-আমতা রোডের সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কারণ কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাওয়া হাওড়া ও কলকাতাগামী সমস্ত পণ্যবাহী গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙাচোরা ওই রাস্তার দায়িত্ব নেওয়ার পরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) কাজ শুরু করে। বাঁকড়া বাজার এলাকার রাস্তা মেরামতির জন্য পেভার ব্লক রাখা হয়। কিন্তু এক সকালে দেখা যায়, পেভার ব্লক উধাও। স্থানীয় আসিক লস্কর বলেন, ‘‘দ্বিতীয় দফায় পেভার ব্লক ফেলার পরেও লরি দাঁড় করিয়ে সমস্ত ব্লক তুলে নিয়ে যায় কয়েক জন।’’
এর পিছনে তৃণমূল রয়েছে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের যুব কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি নূরজ মোল্লা এবং বাঁকড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আক্তার হোসেন মোল্লার বক্তব্য, ‘‘এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ঠিকাদাররাই এই মাল সরিয়েছে। আমরা রাস্তা মেরামতের জন্য সর্বস্তরে চিঠি দিয়েছি।’’
আরভিএনএল-এর এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘২৫ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের দায়িত্বে আছি। কে, কখন, কোথা থেকে জিনিস নিচ্ছে বা ফেলছে, তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই খোঁজখবর নেব।’’