• পুজোর আনন্দ ফিকে কাঁটাতারের ও পারে
    আনন্দবাজার | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ভারতীয় হয়েও বসবাস কাঁটাতারের ও পারে। ফলে স্বদেশের মাটিতেও বিদেশির মতো জীবন কাটাতে হয়। চলাচলে রয়েছে বিধিনিষেধ। তার জেরে মন চাইলেও পুজোয় সে ভাবে আনন্দে মেতে উঠতে পারেন না মাথাভাঙার মহকুমার শালবাড়ি, সাতগ্রাম মানাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা।

    গ্রাম দু’টিকে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে আলাদা করেছে কাঁটাতার। ও পারের বাসিন্দারা দিনের বেলায় মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারলেও রাতে চলাচলে রয়েছে বিধিনেষধ। যাতায়াতের পথে রয়েছে লোহার ভারী ফটক। রাত হলে তা বন্ধ হয়ে যায়। পুজোয় রাতে চলাচলে ছাড় থাকলেও নির্দিষ্ট সময় ফিরতে পারবেন কি না সেই উদ্বেগ থাকে। তাই অনেকে দিনদুপুরে প্রতিমা দর্শন সেরে নেন। বেলা থাকতে বাড়ি ফেরেন। তা নিয়ে আফসোস যায় না মাথাভাঙা ১ ব্লকের শিকারপুরের সাতগ্রাম মানাবাড়ি বুথের ডাক্তারপাড়ার গোসাই পাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের একাংশ জানান, রাতে দূর থেকে ঢাকের আওয়াজ, মাইকের আওয়াজ ভেসে আসে। মঙ্গলারতির সময়ে ধূপ, ধূনোর ধোঁয়ায় প্রতিমার মুখ কেমন দেখতে হয়, কল্পনা করেন। তবে কোনও দিন চাক্ষুস করেননি। বাড়ির কচিকাঁচারা নিয়ম বোঝে না। তারা রাতে প্রতিমা দেখার বায়না ধরে। তাদের নানা কথা বলে চুপ করাতে হয়।

    ডাক্তারপাড়ার বাসিন্দা মহেন্দ্র রায় মতে, ‘‘বিএসএফ রাতে ঠাকুর দেখার অনুমতি দিলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবাইকে এক সঙ্গে ফিরতে হয়। সেই ভয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে বার হতে চান না। কাঁটাতারের ও পারের মানুষের মতো পুজোয় আনন্দ করার স্বাধীনতা আমাদের নেই।’’

    শীতলখুচি ব্লকের মহিশমুড়ি শালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সুনীল ডাকুয়া, হরেন রায়ের কথায়, ‘‘ঢাকের বাদ্যি ভেসে এলে মন আনচান করে। তবে রাতে বাড়ি ছেড়ে ও পারে যেতে ভয় করে। তাই সপরিবারেরাতের প্রতিমা, আলোর কারিকুরি দেখা হয় না।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)