১৬ বছর ধরে তিনি সরকারি হাইস্কুলে অঙ্কের দিদিমণি, এবং তৃণমূল পরিচালিত তমলুক পুরসভার পুর-প্রতিনিধি! এ হেন বৈশাখী মাইতি পড়্যার-এর নিজের স্কুলেও রবিবার ‘স্কুল সার্ভিস কমিশন’-এর পরীক্ষার কেন্দ্র হয়েছে। কিন্তু সেখানে নজরদারির ডিউটিতে থাকার বদলে বৈশাখী তাঁর স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই অন্য পরীক্ষার্থীর মতো অ্যাডমিট কার্ড হাতে পরীক্ষায় বসেছেন অন্য এক কেন্দ্রে!
তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ডিমারী গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা বৈশাখীর দাবি, ২০০৫ সাল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বসাটা তাঁর একটা শখ বা নেশায় পরিণত হয়েছে। মাঝে নাকি শুধু ‘বিতর্কিত’ ২০১৬ সালের এসএসসিতে তিনি বসেননি। কেন বসেননি, তার খুব একটা যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন, ‘‘কোনও কারণে হয়ে ওঠেনি।’’ কিন্তু বাদবাকি সব এসএসসিতে তিনি বসেছেন।
শুধুই পরীক্ষা দেওয়ার শখেই এই পরীক্ষার্থী হওয়া? বৈশাখীর কথায়, ‘‘আমি পাশ কোর্সের শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত রয়েছি। ‘অনার্স’ বিভাগ ও স্নাতকোত্তর বিভাগে শিক্ষিকা হয়ে বেতন বাড়ানোর লক্ষ্যে এ বার পরীক্ষা দিচ্ছি।’’ তমলুক পুরসভার তৃণমূল-পুর-প্রতিনিধি বৈশাখী। ২০০৯ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করে হলদিয়ার সুতাহাটা লাবণ্যপ্রভা হাই স্কুলে সহ-শিক্ষিকা হিসেবে তিনি যোগ দেন। ২০২১ সালে ‘উৎসশ্রী’ মাধ্যমে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ডিমারী গার্লস হাই স্কুলে বদলি হন। বৈশাখীর কথায়, ‘‘২০০৪ সালে অঙ্কে স্নাতকোত্তর পাশের পর ওই বছরেরই নভেম্বরে নন্দীগ্রামের একটি হাই স্কুলে পার্শ্ব-শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম। ২০০৫ সাল থেকে আমি স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বসছি। ২০০৮ সালে চতুর্থবার পরীক্ষা দেওয়ার পরে পাশ বিভাগে সহ-শিক্ষিকা হিসেবে পাশ করে ২০০৯ সালে যোগ দিয়েছিলাম।’’
২০১৫ সাল থেকে পুরসভা নির্বাচনে ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে টানা দু’বার বিজয়ী বৈশাখী বলেন, ‘‘পরীক্ষা ভালই হয়েছে। যাঁদের পড়াশোনার অভ্যাস রয়েছে তাঁদের পক্ষে প্রশ্ন সহজ ছিল।’’