প্রথম বার স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বসছি। প্রথমবারই পরীক্ষা নিয়ে এমন তোলপাড় হল যে, সারা জীবন মনে থাকবে। ছোট বেলা থেকে শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছা ছিল। ভগবানপুরে মধ্যবিত্ত সংসারে অভাবের মধ্যে খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। পড়ায় ভালই ছিলাম। অঙ্কে অনার্স নিয়ে কলেজ থেকে ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করেছি। টাকার অভাবে বাবা উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি করতে পারেননি। পটাশপুরে ডাঙ্গরতুলসী গ্রামে বিয়ে হয়ে যায়। স্বামী সন্দীপ ঘাটার ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের উৎসাহে বি-এডে ভর্তি হই। ২০১৭ সালে বি-এড পাশ করে এসএসসি পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলাম। এর মধ্যে এমএসসি-ও পাশ করে নিয়েছি। কারণ এসএসসি হচ্ছিল না। শুধু শুধু সময় নষ্ট করতে চাইনি। ছেলে ছোট। ওকে শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে রেখে কলেজে পড়তে যেতাম। সাত বছর এসএসসি না-হওয়ায় উদ্যম হারিয়ে ফেলেছিলাম। পরীক্ষা আর হবে না ধরে নিয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। এ বারে নানা টানাপড়েনের পর মাস খানেক পরীক্ষার জন্য ভাল করে পড়াশোনা করেছি। এগরা ঝাটুলাল হাইস্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে সকালে স্বামী সন্দীপ ঘাটা বাইকে করে পৌঁছে দিয়েছে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কলেজ স্তর থেকে এসেছে। তুলনামূলক ভাবে সহজ প্রশ্ন হয়েছে। পরীক্ষা দিয়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে প্রশ্ন সহজ হয়েছে বলে প্রতিযোগিতা অনেকটাই কঠিন হবে। দেখা যাক স্বপ্ন এত দিনে সফল হয় কিনা।