মেয়ের সিনেমা পরিচালনা ও সিনেমার ‘স্ক্রিপ্ট’ লেখায় মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ দেখে বাবা বলতেন, ‘‘তুই কি সত্যজিৎ রায়ের মতো হবি নাকি?’’ সেই মেয়েরই পরিচালনায় বিশ্ব মঞ্চে ভারতীয় চলচ্চিত্রের মুখ ফের উজ্জ্বল হল। তিনি অনুপূর্ণা রায়। পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লকের মেয়ে। ৮২তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর পরিচালিত সিনেমা ‘সঙ্গস অব ফরগটেন ট্রিজ’ এর জন্য সেরা পরিচালকের খেতাব ‘ওরিজন্তি’ পেয়েছেন বছর ছাব্বিশের অনুপূর্ণা।
পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সুদূর ভেনিস— যাত্রাপথ মোটেই মসৃন ছিল না। অনুপূর্ণার বাবা ব্রহ্মানন্দ রায় থাকতেন নিতুড়িয়ার নারায়ণপুরে। দুই মেয়ের মধ্যে অনুপূর্ণা বড়। তিনি মাধ্যমিক দেন নিতুড়িয়ার রানিপুর কোলিয়ারি হাই স্কুল থেকে। উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা হুড়া ব্লকের নপাড়ায় মামাবাড়িতে থেকে। চাকরিতে বদলি হয়ে ব্রহ্মানন্দ পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিবাসী হন। সেখানের কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হন অনুপূর্ণা। মাস কমিউনিকেশন পড়তে যান নয়াদিল্লি। পরে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি নেন। তাঁর মা মনীষা রায় বলেন, ‘‘সত্যজিৎ রায় মেয়ের অন্যতম ‘আইকন’।’’ অনুপূর্ণা জানান, ২০২২ সালে চাকরি নিয়ে মুম্বইয়ে পাড়ি দেন। থাকতেন একটা ভাঙা অ্যাপার্টমেন্টে। সেই ভগ্ন অ্যাপার্টমেন্টটা এত নান্দনিক লেগেছিল যে সেখানেই শ্যুটিং করেন। নিজের ছবি নিয়ে বলেন, ‘‘পিতৃতান্ত্রিক সমাজে দুই নারী ও তাঁদের অন্তরঙ্গতা নিয়ে সমাজের লড়াইকেই ফুটিয়ে তুলেছি। অভিনেত্রী নাজ শেখ ও সুমি বাঘেল অসাধারণ।’’ অনুপূর্ণা জানান, পুরুলিয়া-সহ দেশের মহিলাদের অবস্থা নিয়েও তিনি কাজ করতে চান।