শনিবার তেহট্টে একটি শপিংমল উদ্বোধন হয়। ছেলেকে নিয়ে সন্ধ্যায় সেখানেই দুর্গাপুজোর বাজার করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই গ্রামের রাস্তায়, মাঠে খেলে বেড়ানো নিশ্চিন্তপুর বটতলা পাড়ার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুতে স্তব্ধ গোটা পরিবার। তাকে যে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে তা এখনও ভাবতে পারছেন না গ্রামের মানুষ। ফুটফুটে চেহারার মিষ্টি ছেলেটাকে যে আর কেউ দেখতেই পাবে না তা ভেবেই শোকাচ্ছন্ন পরিবার, পাড়ার মানুষও।
জানা গিয়েছে, শনিবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে রাত ৮টায় নিশ্চিন্তপুরের বাড়িতে স্বর্ণাভ বিশ্বাসের দেহ এসে পৌঁছায়। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে থাকে দেহ। এর পরে পাশের পুজো মণ্ডপ-সহ দুই জায়গায় নামানো হয় দেহ। রাত ৯টা নাগাদ সৎকারের জন্য পলাশি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে তিনটের দিকে বাড়ি ফেরেন শ্মশান যাত্রীরা। জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে ঠিক করে খাচ্ছেন না মা পিঙ্কি বিশ্বাস। বাবা সত্যেন বিশ্বাসের অবস্থাও একই। সকাল থেকে বাড়ির বাইরেই গ্রামের মানুষদের সঙ্গে বেশি দেখা গিয়েছে। প্রিয়জনরা এসে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিন্তু ছেলে হারানোর শোকে কান্না থামছে না মায়ের।
পাড়ার ও গ্রামের মানুষেরও মনখারাপ। গ্রামের প্রবীণ সনদ বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালেই দুর্গাপুজোয় বিরিয়ানি খাওয়ানোর আবদার করে। হেসেখেলে কথা বলে। তার পরেই তো ওই ঘটনা।” কথা বলার পরিস্থিতিতেই ছিলেন না মা পিঙ্কি বিশ্বাস। বাবা সত্যেন বিশ্বাস বলেন, “ওর মা খাচ্ছে না। আমি গেলেই কান্নাকাটি করছে। আমার ছেলে সবার সঙ্গে কথা বলে। কেন এমন হল জানি না।” তিনি আরও বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।”
তবে শনিবার ন’বছরের বালক খুনের ঘটনায় গণপ্রহারে মৃত্যু হয় এক দম্পতির। সে দিন সকাল থেকে নিশ্চিন্তপুর বটতলাপাড়া মানুষের ভিড়ে থিকথিক করছিল। পাড়ার মোড়ে মোড়ে ছিল মানুষের জটলা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে রবিবার সকাল থেকে থমথমে পরিবেশ ছিল সেখানে। হাতে গোনা কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতার ভিড় তেমন ছিল না। গণপ্রহারের স্থল, অভিযুক্তদের বাড়ি এবং দেহ উদ্ধারস্থলে এ দিন পুলিশ পাহারা ছিল।