লাইন আলাদা করে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো পরিষেবায় সাময়িক স্বস্তি
আনন্দবাজার | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সম্প্রসারিত মেট্রোপথে পরিষেবায় যাত্রী-হয়রানির অভিযোগ পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মেট্রো রেলের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ দেউস্কর। কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজারহিসেবে পি উদয়কুমার রেড্ডির অবসর গ্রহণের পরে মিলিন্দ ওই পদে এসেছেন। দায়িত্ব নিয়েই তিনি মেট্রোর বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত সমস্যা মেটাতে নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ (ব্লু লাইন) এবং নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর (ইয়েলো লাইন) পথে পরিষেবা আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বস্তুত, গত বুধবার থেকে মেট্রোর ওই দুই লাইনে একই রেক ব্যবহার করে পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। নোয়াপাড়ায় ক্রু লবি থেকে চালকদের বিভিন্ন পথে পাঠানো হলেও একই রেক ব্যবহার আপাতত সম্পূর্ণ বন্ধ।
মেট্রো সূত্রের খবর, নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর পথের জন্য তিনটি রেক বরাদ্দ করা হয়েছে। বাকি ২০ থেকে ২২টি রেক চালানো হচ্ছেউত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত। তবে, এই ব্যবস্থায় দক্ষিণে ট্রেন ঘোরানোর ক্ষেত্রে সমস্যা না মিটলেও মাঝপথে মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে এসে পরিষেবা ছাঁটাই করার প্রয়োজন পড়ছে না। পাশাপাশি, দৈনিক পরিষেবার সংখ্যাও আগেরজায়গায় ফিরিয়ে আনা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মেট্রোর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ব্যস্ত সময়ে হঠাৎ ভিড় বেড়ে গেলে পরিস্থিতি সামাল দিতে আগে থেকেই টালিগঞ্জ এবং নোয়াপাড়ায় তিনটি করে মোট ছ’টি রেক মজুত রাখা হচ্ছে।
বুধবার রাজ্য সরকারের ছুটি থাকায় মেট্রোয় যাত্রী সংখ্যা কিছু কমছিল। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মেট্রোয় সফর করেছেন ৩.৭ লক্ষ যাত্রী।মেট্রো সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারযাত্রী সংখ্যা কিছুটা বাড়লেওপরিস্থিতি তার আগের সপ্তাহের মতো ভয়াবহ হয়নি।
তবে, শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে যাত্রা সম্পূর্ণ করার পরে কবি সুভাষ স্টেশন থেকে ট্রেন ঘুরিয়ে আনতে গড়ে আট থেকে ন’মিনিট সময় বেশি লাগছে। সেই দেরি এখনও পুরো মেটানো যায়নি। যদিও নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথ আলাদা করে দেওয়ায় পর পর ট্রেনের দেরি তুলনামূলক ভাবে কমেছে।
এর সঙ্গে, বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের ট্রেন সম্পর্কে জানানোর জন্যঘোষণার উপরে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে বলেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এসপ্লানেড স্টেশনে যাত্রীদের ট্রেন বদল করার বিষয়ে জানাতে আগেভাগে চালকেরাই ঘোষণা করছেন। শহিদ ক্ষুদিরাম মেট্রো স্টেশনে কবি সুভাষের দিকে একটি সিগন্যালের কাছাকাছি ক্রস ওভার তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
কবি সুভাষ স্টেশনে ধসের কারণে প্ল্যাটফর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মেট্রোর লাইনের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু,ছাউনি খোলার জন্য ডাউন প্ল্যাটফর্মের থার্ড রেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরা হয়েছে। এই অবস্থায় ওই স্টেশনকে কী ভাবে পরিষেবা মসৃণ করার কাজে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, কবিসুভাষ স্টেশনের উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর অংশ বন্ধ থাকায় নিউ গড়িয়া-বেলেঘাটা মেট্রোপথে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বলে অভিযোগ।
আপাতত সমস্যা কিছুটা কমলেও পরিষেবা মসৃণ রাখতে মেট্রোরকর্মী সংগঠনগুলি নতুন কর্মী নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। কলকাতামেট্রো রেলের প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘দক্ষ কর্মীরাই প্রতিষ্ঠানের সম্পদ। কর্মী নিয়োগ না করলে দীর্ঘ মেয়াদেও পরিষেবার হাল ফিরবে না।’’