• জয়তীকে ‘গাধী’ বলে কটাক্ষ! গায়িকার আফসোস, ‘আমারই ভুল হয়েছিল’, কেন চরম অপমানিত হতে হল তাঁকে
    আজকাল | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • জয়তী চক্রবর্তী। বাংলার সঙ্গীতজগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কণ্ঠের মায়া যে কোনও গানকেই অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। সাফল্যের শিখরে পৌঁছেও থামাননি সাধনা। আলোকবৃত্তের বাইরে সুরের সঙ্গে যাঁর দিনরাতের যাপন, এ হেন শিল্পীর দিকেও ধেয়ে কটাক্ষ। সঙ্গী হয় চরম অপমান। সম্প্রতি এক পডকাস্টে সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন তিনি।

    জয়তী বলেন, “বনমালী তুমি পর জনমে হইও গাধী, এটা লিখে সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন আমাকে ট্রোল করেছিল”। এহেন কটাক্ষ-প্রাপ্তির কারণ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে গায়িকার স্পষ্ট উত্তর, “তার হয়তো আমাকে পছন্দ নয়।” তবে এখানেই থেমে যাননি গায়িকা। পুরো ঘটনাটি খোলসা করেন। জানান, জনৈক সঙ্গীতানুরগী নিজের গান প্রসঙ্গে জয়তীর মতামত চেয়েছিলেন। নেটমাধ্যমে ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে’ গানটি গেয়ে, জয়তীকে তা ট্যাগও করেন। আবদার, খ্যাতনামা গায়িকা যাতে তাঁর গান সম্পর্কে নিজের মতামত জানান। আর সেখানেই ঘটে বিপাক।

    জয়তী কোনও রাখঢাক না করেই সেই নেটিজেনের গান সম্পর্কে নিজের মতামত জানিয়েছিলেন। আর তাতেই বেজায় চটে যান তিনি। গায়িকার কথায়, “আমার ভুল হয়েছিল। আমি বুঝতে পারি। আমার ভুল হয়েছিল যে, আমি বিশ্বাস করে ফেলে সহজে সত্যি কথাটা বলেছিলাম। সখী ভাবনা কাহা রে গানটি গেয়ে আমায় ট্যাগ করে লিখেছিল, দিদি তুমি আমায় বলো কোনও ভুল আছে কি না। যেহেতু আমাকে এতটা প্রকাশ্যে আমাকে বলেছে, আমি বলেছিলাম যে এই জায়গার সুরটা একটু দেখে নিও। সে মনে করেছে আমি সবার সামনে তাকে অপমান করেছি।”

    তুমুল কটাক্ষের শিকার হয়েও কোথাও যেন নিজেকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন জয়তী। দোষারোপ করেননি সেই ব্যক্তিকে। তাঁর কথায়, “এটা আমার অবিবেচনা। বিবেচনাহীন একটা কাজ। কারণ আমার হয়তো তাঁকে কথাটা ব্যক্তিগত ভাবে বলা উচিত ছিল। আমার মনে হয়, আমি নিশ্চয়ই তাকে দুঃখ দিয়েছি, তা না হলে এতখানি ক্রোধের জায়গা তৈরি হত না। তো দুঃখটা আমি দিয়েছি বলেই, তাকে আঘাত করেছি বলেই, সে এতটা ভিতরে নিজে জ্বলেপুড়ে মরছে যে আমাকে বারংবার আঘাত করতে চাইছে।”

    জয়তীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা। অনেকেরই মত, প্রকাশ্যে মতামত চাইলে, তা শোনার ক্ষমতাও রাখা উচিত। কেউ কেউ আবার আঙুল তুলেছেন ক্রমবর্ধমান মানসিক অবক্ষয়ের দিকে। তাঁদের মতে, শিল্পীদের ‘সফট টার্গেট’ করে তাঁদের অপমানটা যেন বর্তমানে জল-ভাতে পরিণত হয়েছে।

    নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে শুরু করে আধুনিক বাংলা গান—সবেতেই জয়তীর স্বতন্ত্র ছাপ স্পষ্ট। আজকের দিনে তিনি শুধু একজন শিল্পী নন, বরং বাংলার আধুনিক গানের অনুরাগীদের কাছে অনুপ্রেরণার প্রতীকও বটে। বিতর্কহীন নিখাদ পেশাগত জীবন। তবু ট্রোল-কটাক্ষ পিছু ছাড়ে না। একেই বোধ হয় বলে খ্যাতির বিড়ম্বনা।
  • Link to this news (আজকাল)