‘শেখার কোনও বয়স নেই’, ৫২ বছরে এমবিএ ডিগ্রি পাওয়ার পর বাবার জন্য ছেলে যা করলেন...
আজকাল | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মুম্বইয়ের ৫২ বছর বয়সি এক ব্যক্তি। তবে এরপরে যা ঘটেছে তা একপ্রকার তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। বাবার জীবনের এই সাফল্যকে স্মরণীয় করে তুলতে তাঁর ছেলে আয়োজন করেছেন এক অভিনব পার্টির। এই সাকসেস পার্টির থিম ছিলেন স্বয়ং তাঁর বাবা! মুহূর্তটির ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে ইন্টারনেটে। ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন মৈত্রেয় সাঠে। তার ক্যাপশনে লেখা—’graduATE’। ভিডিওটি আপলোড হওয়ার পর থেকেই তা একপ্রকার ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল ইতিমধ্যেই এটি ৩ লক্ষ ১৬ হাজারেরও বেশি ভিউ ছুঁয়েছে। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি বাড়িতে প্রবেশ করতেই পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা তাঁকে চমকে দেন। ঘরে উপস্থিত প্রত্যেকে তাঁর মুখের মাস্ক পরে রয়েছেন।
চারপাশের দেওয়াল ভর্তি রঙিন স্টিকি নোটে, যেগুলো তিনি পড়তে পড়তে মুগ্ধ হয়ে পড়েন। তাঁর চোখে মুখে আনন্দ ঝরে পড়তে দেখা যায়। হঠাৎ পরিবারের তরফে পাওয়া এই আয়োজন তাঁকে আবেগে ভাসিয়ে তোলে। আর উপস্থিত সকলে করতালি দিয়ে উৎসাহ দেন। নেটচমাধ্যমে ভিডিওটি পাবলিশ হওয়ার পরে অনলাইনে তার প্রতিক্রিয়াও ছিল উৎসবের মতোই উষ্ণ। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আজ ইন্টারনেটে দেখা সবচেয়ে সুন্দর জিনিস এটি।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘তাঁর মুখের হাসিই সব বলে দিচ্ছে।’ কেউ লিখেছেন, ‘অসাধারণ কিউট।’ দার্শনিক মর্টিমার অ্যাডলার যেমন বলেছিলেন, ’শিক্ষার উদ্দেশ্য হল বিকাশ, আর আমাদের মস্তিষ্ক শরীরের মতো কোনও একটা বয়স পর্যন্ত গিয়ে থেমে যায় না, জীবনের সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তেই থাকে।’
নিঃসন্দেহে, মৈত্রেয় সাঠের বাবা তাঁর নতুন ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে সেই কথাই প্রমাণ করলেন। উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি এক পোস্ট শেয়ার করেছিলেন লেখক অঙ্কুর ওয়ারিকু। সেখানে নিজের জীবনের এক রহস্যের কথা ফাঁস করেছেন তিনি। একজন পিএইচডি ড্রপআউট থেকে ক্যাম্পাসের শীর্ষ নিয়োগপ্রাপ্তদের একজন হয়ে ওঠার কাহিনি ফাঁস করেছেন তিনি। বর্তমানে, মাত্র ৫ বছরের মধ্যে তাঁর বার্ষিক বেতন ৩ লক্ষ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ লক্ষে। পোস্টে অঙ্কুর লেখেন, ‘আমি প্রথম চাকরি পাই ২৪ বছর বয়সে। সেই সময় আমার বেতন ছিল ১৪,৭৪৬ টাকা। ২৬ বছর বয়সে আমার বার্ষিক আয় দাঁড়ায় ১২ লক্ষ। আর ২৯ বছর বয়সে তা হয় ৩৩ লক্ষ’। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করার মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেশে ফেরেন তিনি। তখন তাঁর কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছিল না। ছিল শুধুমাত্র আর্থিক নিরাপত্তার তাগিদ।
এমবিএ ডিগ্রি নেই, কোনও বড় নেটওয়ার্ক বা পরিচিতি না থাকা সত্ত্বেও তিনি একের পর এক দরজা ধাক্কাতে থাকেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেছি, ওয়াক-ইন ইন্টারভিউ দিয়েছি, পরিচিতদের সাহায্য চেয়েছি। অবশেষে ৪৫ দিনের চেষ্টার পর এক সংস্থায় ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। শেষ রাউন্ডে ওরা আমাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘তুমি কীরকম বেতন প্রত্যাশা করছ?’ আমি বুঝতেই পারিনি কী বলব! ওরা আমাকে ১৫,০০০ ইন হ্যান্ড অফার করল—যা সেই সময়ে আমার প্রত্যাশার থেকেও বেশি’। অঙ্কুরের এই গল্পটি শুধুই গল্প নয়, এটি হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর জন্য এক অনুপ্রেরণা। যারা স্বপ্ন দেখছে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার, চ্যালেঞ্জকে জয় করার। অঙ্কুর প্রমাণ করেছেন, ডিগ্রি নয়-চেষ্টা, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাসই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।