জাল ওষুধ-চক্রের পর্দা ফাঁস, উদ্ধার লক্ষ লক্ষ টাকার জাল অ্যান্টিবায়োটিক-পেইন কিলার! গ্রেপ্তার এক...
আজকাল | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে পুলিশ আসানসোলের হিরাপুরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বেআইনি ওষুধ উদ্ধার করল। হিরাপুর থানার জিডি নং ২৮২, (৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫) অনুযায়ী, থানার এসআই অঞ্জন মণ্ডল, এসআই সুমন সিংহ এবং পুলিশবাহিনীর একটি দল, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হানা দেয় আসানসোলের হিরাপুর এলাকার বাসিন্দা শতদল রায়ের বাড়িতে।
অভিযানে উদ্ধার হয় বিপুল সংখ্যক বেআইনি ওষুধ সামগ্রী, যার মধ্যে ছিল * অ্যান্টিবায়োটিক, * অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি,* অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ,* ভিটামিন সম্পূরক, * ক্যালসিয়াম সম্পূরক ইত্যাদি।
উদ্ধারকৃত সামগ্রীর বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলেই শতদল রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে নেয় বলে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রে খবর।
পরের দিন, অর্থাৎ ৬ই সেপ্টেম্বর, বিষয়টি জানানো হয় বর্ধমান জেলা ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসের অতিরিক্ত জেলা ড্রাগ কন্ট্রোলারকে। বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলা ড্রাগ কন্ট্রোলের (ইন্সপেক্টর অফ ড্রাগ কন্ট্রোল) সমীরণ মণ্ডলের নির্দেশ অনুসারে ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সহায়তার জন্য আরও তিনজন ইনস্পেক্টর অফ ড্রাগস উজ্জ্বল মাহাতো, সুমন গোস্বামী ও অতনু চন্দ্রকেও যুক্ত করা হয়। এরপর ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসের আধিকারিকরা হিরাপুর থানায় গিয়ে উদ্ধারকৃত ওসুধ সামগ্রী পুনরায় রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের আয়ত্তে নেওয়া হয়।
ধৃত শতদল রায়কে শনিবার আসানসোল জেলা আদালতের সিজেএমের এজলাসে তোলা হয়। অভিযোগ আনা হয়েছে, ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিকস অ্যাক্ট, ১৯৪০-এর ধারা ১৮(সি), ১৮এ, ১৭বি এবং ২২(১)(সিসিএ) অনুযায়ী, যা ভারতীয় দণ্ডবিধি ধারা ২৭ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
পর্যবেক্ষণের পর দু'টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে আদালত :১. বাজেয়াপ্ত বেআইনি ওষুধ সামগ্রীর হেফাজতের বিষয়ে নির্দেশ।২. অভিযুক্ত শতদল রায়কে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (জে.সি) প্রেরণ।
রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রে খবর, যে ওষুধগুলি উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলি সঠিক কোন নথি অর্থাৎ আইনানুগ কোন বিল সংক্রান্ত তথ্য দেখাতে পারেনি ধৃত। সেই কারণেই এই ওষুধগুলিকে বেআইনি হিসাবে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ এবং রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। এই যুবক বহুদিন ধরেই বেআইনিভাবে এই ওষুধের চোরাকারবার করছিল, কোন বিল বা নথি ছাড়া। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ধরা পরেছে এই ব্যক্তি। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে এই চক্রের পিছনে আরও কেউ আছে কিনা এবং আরও কত বেআইনি ওষুধ মজুদ রয়েছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে ওষুধ মজুত ও ব্যবসা চলছিল। তবে পুলিশের তৎপরতায় তা প্রকাশ্যে এসেছে।