‘নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো’। একদিন জীবন থামবে মৃত্যুর কাছে, এটা নির্মম সত্য। তবু হার মানলে চলবে না। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জারি থাকবে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই | ঠিক যেমনটি বেঁচে আছেন মারন ক্যান্সার আক্রান্ত চাকরি হারানো বনগাঁর শিক্ষিকা সৌমি বিশ্বাস। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষিকা তিনি। কয়েকমাস আগে আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে তাঁর। একদিন স্কুলের যে ঘরে বসে তিনি ছাত্রীদের পড়িয়েছেন, রবিবার সেই ঘরের বেঞ্চে বসেই স্কুল সার্ভিস পরীক্ষা দিলেন সৌমি।
সৌমির স্বামী বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত। বছর তিনেকের একটি সন্তানও রয়েছে দম্পতির। আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে সৌমির। চাকরি হারানোর ১০ দিনের মধ্যে তিনি জানতে পারেন যে, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। স্টেজ ফোর। তবু হাল ছাড়তে নারাজ সৌমি। সবার নজরে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের সময় এসেছে। তিনি যে একজন যোগ্য চাকরিহারা তা মৃত্যুর আগে প্রমাণ করার পণ নিয়েছেন। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী জেনেও অযোগ্যতার কালী ঘুচিয়ে ফেলতে চান তিনি। মৃত্যু ভয় তাঁকে কাবু করতে পারেনি।
মেধা আর ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করে রবিবার স্বামীর হাত ধরে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসেন সৌমি। যে স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করেন সেই কুমুদিনী স্কুলেই তাঁর এসএসসি পরীক্ষার সিট পড়েছিল। পরীক্ষা হল থেকে নির্দিষ্ট সময়ে বের হওয়ার পর সৌমি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে চাকরি চলে যায়। তারপর জানতে পারি আমার ক্যান্সার হয়েছে। তাও স্টেজ ফোর। তবু চাকরি পেলে শান্তি পাবো। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে ফের পরীক্ষা দিলাম।’