তথাগত চক্রবর্তী: কিশোরী বয়স থেকেই শুরু, আর তারপর থেকে একের পর এক চুরির ঘটনায় যুক্ত রাবিয়া বিবি। ট্রেনে চুরি, ছিনতাই, গ্রেফতার, জেল- সবই তার জীবনের নিয়মিত অধ্যায় হয়ে উঠেছিল। জেল থেকে বেরিয়েই আবার পুরনো অভ্যাসে ফিরতেন তিনি। এতটাই নিখুঁত ছিল তার হাতসাফাইয়ের কায়দা যে শিকাররা বুঝতেই পারতেন না কবে টাকা বা গয়না হাত বদল হয়েছে। কাজের আগে দলবল নিয়ে রেইকি চালাতেন, টার্গেট বেছে তারপরেই হত পদক্ষেপ।
এই চক্রের মূল মাথা রাবিয়া বিবি। প্রথমদিকে একা কাজ করলেও পরে তার স্বামী-সহ আরও কয়েকজন যুক্ত হন। ট্রেন ছাড়িয়ে এবার ব্যাংকে নজর দিতে শুরু করে সে। বিশেষত বয়স্কদেরই নিশানা বানানো হত। দলের লোকজন ব্যাংকে ঢুকে খেয়াল করত কারা টাকা তুলছেন, কতটা টাকা তুলছেন এবং কোন ব্যাগে রাখছেন। এরপর রাবিয়া নিখুঁত ব্লেড কৌশলে ব্যাগ কেটে টাকা উধাও করে দিতেন। এতটাই সাবলীল ছিল কাজ যে কাউকে জড়িতের টের পেতেই সময় লেগে যেত।
সম্প্রতি সোনারপুরের এক ব্যাংক থেকে তপতী সরকার নামে এক মহিলা এক লক্ষ টাকা তোলেন। ব্যাঙ্কের বাইরে চা খেতে দাঁড়াতেই রাবিয়া ও তার সঙ্গীদের ফাঁদে পড়েন তিনি। অভিযোগ দায়ের হতেই সোনারপুর থানার পুলিস তদন্তে নামে এবং শেষমেশ রাবিয়া বিবি ও মিতা পুরকাইতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুর, জয়নগর থেকে শুরু করে উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া পর্যন্ত রাবিয়ার একাধিক ঘাঁটি রয়েছে। শুধু তাই নয়, দুই ২৪ পরগনা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, বীরভূম ও বাঁকুড়ায় ছড়িয়ে রয়েছে এই চক্রের জাল। বহুবার ধরা পড়লেও আবারও একই কায়দায় সক্রিয় হয়ে ওঠা রাবিয়ার দাপট শেষ পর্যন্ত পুলিসের ফাঁদে আটকাল।