মাঠে চাষ করতে গিয়েছিলেন, আচমকাই ভারতীয় কৃষককে তুলে নিয়ে গেল বাংলাদেশিরা! সীমান্তে ফের চাঞ্চল্য ...
আজকাল | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ফের উত্তেজনা। সোমবার সকালে বাংলাদেশিদের হাতে আটক হলেন ভারতের কৃষক কৃষ্ণকান্ত বর্মন। ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের শীতলকুচি ব্লকের গোলেনাওহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিববাড়ি সীমান্তে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে বৈধ নথি জমা দিয়ে নিজের জমিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন মীরাপাড়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক কৃষ্ণকান্ত বর্মন। সেই সময় বাংলাদেশিদের সঙ্গে হঠাৎই এক অজ্ঞাত কারণে বচসা বাঁধে। অভিযোগ, তর্কাতর্কির জেরে কৃষ্ণকান্তকে তুলে নিয়ে যায় বাংলাদেশিরা।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কৃষ্ণকান্তর পরিবার ভেঙে পড়ে কান্নায়। পরিবারের দাবি, প্রতিদিনের মতোই তিনি বৈধ অনুমতি নিয়েই সীমান্ত পেরিয়ে জমিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কৃষ্ণকান্তের পরিবারে নয়জন সদস্য রয়েছেন। দুই মেয়ের ইতিমধ্যেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সংসারের ভরসা হিসেবে সীমান্তবর্তী নিজের জমিতেই চাষাবাদ করতেন কৃষ্ণকান্ত। পরিবার জানায়, সামান্য জমিজমার আয়ে দিন গুজরান চললেও এভাবেই সংসারটাকে কোনওমতে ধরে রেখেছিলেন তিনি। ঘটনার খবর পাওয়ার পরই কৃষ্ণকান্তর পরিবারের সদস্যরা বিএসএফ ও শীতলকুচি থানায় অভিযোগ জানায়। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তবে এখনও পর্যন্ত কৃষ্ণকান্ত কোথায় এবং কী অবস্থায় আছেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
ঘটনার জেরে এলাকার রাজনীতিও উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান শীতলকুচি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তপন কুমার গুহ ও শীতলকুচি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মদন বর্মন। তাঁরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করেন, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, 'আমরা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বাংলাদেশিদের জন্য সীমান্তবর্তী ভারতীয় কৃষকদের বারবার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সরকার ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আরও সজাগ থাকতে হবে। কৃষ্ণকান্তবাবুকে যাতে দ্রুত উদ্ধার করা যায়, সেই দাবি আমরা তুলব।'
উল্লেখ্য, সীমান্তবর্তী এলাকায় কৃষকদের প্রায়শই এরকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় বলে অভিযোগ। বৈধ নথি জমা দিয়েও সীমান্তের ওপারে গিয়ে কাজ করার সময় নানা কারণে দুই দেশের মানুষের মধ্যে বচসা বা সংঘাত দেখা দেয়। এবারের ঘটনায় গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে কৃষ্ণকান্তকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব হয়েছেন।