আজকাল ওয়েবডেস্ক: মেট্রো রেলের বিন্যাস শহর কলকাতা তথা রাজ্যবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এক ঐতিহাসিক ব্যবস্থা। কলকাতা মেট্রোর সম্প্রসারণের পর এমনটাই দাবি করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। বহু প্রতীক্ষার পর সম্প্রতি কলকাতা মেট্রো সরাসরি হাওড়া থেকে সেক্টর ফাইভ, বিমানবন্দর এবং বেলেঘাটা পর্যন্ত ট্রেন চালু করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, কলকাতা মেট্রোকে একই সূত্রে বাধার পর মানুষের আবেগ ছিল যথেষ্ট পরিমাণ, কিন্তু মেট্রো রেলের পরিকাঠামো সেই পরিমাণ ছিল কি? সম্প্রতি, ব্লু লাইনে নিত্যযাত্রীদের পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। একাধিক স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে মেট্রো ছাড়তে পারছে না। শিয়ালদা কিংবা এসপ্ল্যানেড কিংবা হাওড়া স্টেশনে ভিড় অত্যাধিক হয়ে উঠছে অফিস টাইমে। ঠাসাঠাসি ভিড়ে গেট বন্ধ করাও দায় হয়ে উঠেছে।
ফলে নাগরিক পরিষেবা যেমন হচ্ছে ক্ষুন্ন তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে দিনে দিনে। যে পরিমাণ নিত্যযাত্রী সেই তুলনায় মেট্রোরেলের পরিষেবা এবং পরিকাঠামো কোনওটাই এখনও সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারেনি মেট্রোরেল। এর ফলে প্রায়শই এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। এই পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে অর্থাৎ নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ট্রেনে চাপলে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি। কখনও কখনও অসুস্থ পর্যন্ত হয়ে পড়ছেন বয়স্ক মানুষরা। আর শিশু হলে তো কথাই নেই। মেট্রোর দরজা বন্ধ হয়ে যাবার পর ভয়ানক ভাবে হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হচ্ছে এবং অক্সিজেনের ঘাটতি পর্যন্ত ঘটছে বলে দাবি করছেন নিত্যযাত্রীরা।
মেট্রোরেল কোনওরকম সঠিক পরিকাঠামো ও পরিকল্পনা না নিয়েই এই ধরনের সম্প্রসারণের কাজ করেছে বলে একপ্রকার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বেশিরভাগই। ভিড়ের কারণে দরজা বন্ধ হতে দেরি হওয়ায় দেরি হচ্ছে মেট্রোর নির্ধারিত সময়েও। প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর মেট্রো চলাচল করলেও সিগনালিং ব্যবস্থা ঠিক রাখা যাচ্ছে না, কারণ আগের মেট্রো একটি সঠিক দূরত্বে না গেলে পরের মেট্রো রেলকে চালনা করা বা প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। এমনটাই জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিক রূপায়ণ মিত্র এই বিষয়ে বলেন, ‘পূর্বের থেকে মেট্রোরেলের যাত্রীসংখ্যা কয়েক গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে পরিষেবার দিক থেকে। আমরা যত শীঘ্র সম্ভব এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। মেট্রোরেলের সংখ্যা আপাতত একই থাকবে তবে পরিকাঠামো ও পরিষেবা কে আরোও কিভাবে উন্নত করা যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি।’
প্রতিদিনই নিত্যযাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে টিকিট কাউন্টারগুলিতে। টিকিট কাটার পর প্ল্যাটফর্মেও প্রচণ্ড ভিড়। নেই কোন পরিকাঠামো, নেই কোনও সুব্যবস্থাও। যার ফলে চরম ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। কিন্তু মেট্রো রেলের আয়ের গ্রাফ যথেষ্ট ঊর্ধ্বমুখী পূর্বের তুলনায়। এমনটাই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের আয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রূপায়ণ মিত্র বলেন, ‘টিকিটের বিষয়টি নির্দিষ্ট করে এক্ষুনি বলা সম্ভব নয়, তবে পূর্বের থেকে টিকিট বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একই সঙ্গে আয় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সেটা নির্দিষ্ট করে এক্ষুনি কিছু বলা সম্ভব নয়।’