সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গৈরিকীকরণ! বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দীক্ষা দেবেন পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ, সোমবার এই কর্মসূচি ঘোষণার পরই বিতর্কের মুখে পড়ল দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কর্তৃপক্ষ। এভাবে পড়ুয়াদের ‘ব্রেন ওয়াশ’ করতে চাইছে আরএসএস, এমনই অভিযোগ তৃণমূলের। সিপিএমের কটাক্ষ, ভারতবর্ষের নিরপেক্ষতাকে ভাঙতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।
১০ সেপ্টেম্বর এবং ১১ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে দুইদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পুরীর শংকরাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ। তিনি প্রথমদিনে যুব শক্তির মধ্যে বৈদিক জ্ঞান প্রচার করবেন। তারপরের দিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের দর্শন ও দীক্ষা দেবেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর অরবিন্দ চৌবে বলেন, “যুবশক্তির মধ্যে জ্ঞান প্রদান করবেন তিনি। উনি আসবেন, সেই কর্মসূচি এখান থেকে ঠিক করা হয়নি। ঠিক হয়েছে ওখান থেকেই। উনি আসবেন। জ্ঞান প্রচার করবেন। ওঁর কাছে যদি কেউ কিছু জানতে চান জানাবেন। কেউ দীক্ষা নিতে চাইলে দীক্ষাও নিতে পারবেন। অনেক যুব মানসিক অবসাদ ভোগে। তাদের অবসাদ কাটানোর জন্য নানান জ্ঞান দেবেন। যুব শক্তি কোনও ধর্মের হয় না।”
এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর ধর্মীয় মেরুকরণ হচ্ছে। আরএসএসের মতে এসব কাজ হচ্ছে। অন্যায় কাজ করছে এরা। আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপিও তাদের সোশাল মিডিয়ার পেজেও সরাসরি ধর্মীয় বার্তা দেয়। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব।” সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর কথায়, “ভারতবর্ষ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। সেখানে কোনও সরকারি জায়গায় ধর্মীয় কিছু হতে পারে না। ভারতবর্ষের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যে তৃণমূল সরকার সেই নিরপেক্ষতা ভেঙে দিতে চাইছে। আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। আগামী দিনেও প্রতিবাদ চলবে।”
পালটা জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ভিতর কোনও ধর্মগুরুকে তারা নিয়ে আসবেন, সেটা তারাই বলতে পারবেন। তবে তৃণমূল শুধু বিশেষ সম্প্রদায়কে গুরুত্ব দেয়। ওই জন্য তারা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মগুরু আসা নিয়ে নানা কথা বলছে।”