রবীন রায়, আলিপুরদুয়ার: বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর খুলছে জঙ্গল। হাতি এবং কার সাফারির সুযোগ। আলিপুরদুয়ার পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। আর কী কী দেখবেন পর্যটকরা?
তালিকা বেশ দীর্ঘ। তাতে আছে লঙ্কাপাড়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক। থাকছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামকরণ করা ‘বনছায়া’ গ্রামের শান্ত নিবিড় পরিবেশে হোম স্টে’তে রাত্রি যাপন। এছাড়াও পুজো ভ্রমণে নিশ্চিতভাবেই ছক্কা হাঁকাতে চলেছে গত সপ্তাহেই খুলে যাওয়া ৭৮ ফুট উচ্চতায় তৈরি ‘গ্লাস টাওয়ার’। আছে ‘বইগ্রাম’।
পুজোর আগে বর্ষণসিক্ত ডুয়ার্সের বনানী, চা বাগান, নদী ও পাহাড়। অপার সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষা করছে তারা। পর্যটকদের চোখের সামনে নিজেকে উপুড় করে ঢেলে দেবে বলে সেজেগুজে তৈরি। এখন প্রকৃতি হাতছানি দিয়ে পর্যটকদের আহ্বান জানাচ্ছে। আলিপুরদুয়ারে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প, চিলাপাতা বা জলদাপাড়া সবার কাছেই পরিচিত নাম। সাফারির টানে এবারও এই তিন বনাঞ্চলে আসতে চলেছে অনেকে। তার জন্য শুরু হয়েছে বুকিংও।
শহরের কোলাহলক্লান্ত পরিবেশ থেকে নিরিবিলিতে ছুটি কাটাতে এবার বাঙালির পুজোর ভ্রমণে ‘হট ফেভারিট’ হতে চলেছে ভুটান সীমান্তের লঙ্কাপাড়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক। বীরপাড়া থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ভুটান সীমান্তের জিরো পয়েন্টে রয়েছে উদ্যানটি। চা বাগান, তিথি নদী ও সবুজ জঙ্গল হল এখানকার ইউএসপি। সেখানে সামনে তাকালেই ভুটান পাহাড়। আর বাতাসে কান পাতলেই নাম না জানা অসংখ্য পাখির কলকাকলি।
এছাড়াও পুজোর ভ্রমণের অন্যতম ডেস্টিনেশন হতে চলেছে ‘বনছায়া’ গ্রাম। এই গ্রামে রাজ্য সরকার পুনর্বাসন দিয়েছে গাঙ্গুটিয়া ও ভুটিয়া বনবস্তিবাসীকে। কালচিনি ব্লক সদর থেকে ১০ কিমি দূরে ভাটপাড়া, মেচপাড়া ও আচ্ছাপাড়া চা বাগানের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে আসা
যায় বনছায়ায়। সরকার ১০টি হোম স্টে’র রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে। আদিবাসী, নেপালি সম্প্রদায়ের শিল্পীরা পর্যটকদের স্বাগত জানাবেন লোকায়ত সঙ্গীত ও নৃত্য দিয়ে। চা বাগান, রায়মাটাং নদীর খাত ও জঙ্গলের মন কেমন করা নান্দনিক নির্জনতা মন ছুঁয়ে যাবে। সঙ্গে থাকছে জিরো পয়েন্ট থেকে সামনে থাকা ভুটান পাহাড়ের হাতছানি। বনছায়ায় রাত কাটিয়ে পর্যটকরা জয়গাঁ হয়ে সড়কপথে ভুটানের ফুন্টশেলিংও ঘুরে আসতে পারবেন। তার জন্য বনছায়া গ্রামে পাওয়া যাবে মহিলা গাইড।
আলিপুরদুয়ার থেকে সাত কিমি দূরে গ্লাস টাওয়ার। মুম্বইয়ের একটি কারিগরি সংস্থার মাধ্যমে আলিপুরদুয়ারের এক বাঙালি উদ্যোগপতি এই টাওয়ার বানিয়েছেন। ইস্পাত দিয়ে তৈরি। কাঠামোর উপরের অংশে কাচের প্ল্যাটফর্ম। টাওয়ারে আছে দূরবীন, দোলনা, সেলফি জোন। পুজোর আগে জেলার তরুণ তরুণীরা হামলে পড়ছেন টাওয়ারে। এখান থেকেই বক্সা পাহাড়, ভুটান পাহাড়, বক্সার জঙ্গল ও আলিপুরদুয়ার শহরের দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ।
এর পাশাপাশি আছে রাজ্যের একমাত্র বইগ্রাম। জেলা শহর থেকে ন’কিমি দূরে পানিঝোরা বইগ্রাম বাঙালির পুজো ভ্রমণের তালিকায় জায়গা করে নেবে। সবমিলিয়ে বাঙালির পুজো ভ্রমণের তালিকায় পর্যটনের জেলা আলিপুরদুয়ার জায়গা করে নিতে চলেছে।