নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত। তাতেই উত্তাল প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। এজন্য সোমবার শিলিগুড়ির নেপাল সীমান্ত পানিট্যাঙ্কিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে এসএসবি। একইসঙ্গে পুলিশও নেপালগামী সড়কে নাকা তল্লাশি অভিযানে নেমেছে। এসএসবি ও পুলিশের বক্তব্য, নেপালের গোলমালের আঁচ যাতে এখানে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এজন্যই সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এদিকে, পুজোর মুখে হিমালয়ের কোলে থাকা ওই দেশের অভ্যন্তরীণ হাঙ্গামা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এবার নেপাল নির্ভর পর্যটন ব্যবসা মার খেতে পারে বলে আশঙ্কা।
গত বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করে নেপাল সরকার। যার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ার ২৬টি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম অকেজো হয়ে পড়েছে। এনিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলির সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত সেই দেশের জনতা। এদিন হিমালয়ের কোলে থাকা এই দেশের কাঠমান্ডুতে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে। সেই ঘটনার আঁচ যাতে শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলায় না পড়ে সেজন্য পুলিশ ও প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে নেপাল অন্যতম। শিলিগুড়ির খড়িবাড়ি ও মিরিকে নেপাল সীমান্ত রয়েছে। নেপালের সঙ্গে ভারতের মিত্রতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এজন্য খড়িবাড়ির পানিট্যাঙ্কির নেপাল সীমান্তে কোনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। সীমান্তের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে মেচি নদী। প্রতিদিনই সংশ্লিষ্ট রুট দিয়ে যাতায়াত করে দু’দেশের মানুষ। নেপালের অভ্যন্তরীণ হাঙ্গার পরই পানিট্যাঙ্কি ও মিরিকে এসএসবি নজরদারি বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে নেপাল সীমান্তবর্তী গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশ ও এসএসবি জওয়ানরা।
এসএসবি সূত্রে জানা গিয়েছে, নেপাল সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে এসএসবি চালাচ্ছে বাড়তি নজরদারি। তবে এদিন সীমান্তে মানুষ ও গাড়ির গতিবিধি স্বাভাবিক ছিল। দার্জিলিং জেলা পুলিশের খড়িবাড়ির এসডিপিও আশিস কুমার বলেন, সংশ্লিষ্ট সীমান্তে নজরদারি রাখা হয়েছে। নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে এসএসবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। এপারের সীমান্তবর্তী গ্রামের রাস্তায় চলছে নাকা তল্লাশি।
এদিকে, হাতেগোনা আর কিছুদিন পরই বাঙালির মেগা উৎসব দুর্গাপুজো। আর পুজো মানেই পর্যটন ব্যবসা। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশের অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধ ঘিরে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পর্যটন ও পণ্য পরিবহণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তাঁদের আশঙ্কা, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রে গোলমাল অব্যাহত থাকলে সেখানে যাওয়ার সাহস পাবেন না পর্যটকরা। এতে ট্যুর বাতিল করতে পারেন বহু পর্যটক।