একই রাস্তা সংস্কারে দু’বার কোটি কোটি টাকার টেন্ডার পূর্তদপ্তরের!
বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: একই মাসে একই রাস্তা সংস্কারের জন্য দু’বার কয়েক কোটি টাকার ওয়ার্কঅর্ডার দিয়ে বিতর্কে রাজ্যের পূর্ত দপ্তর। তৎপর্যপূর্ণ ভাবে দুই ওয়ার্ক অর্ডারেরই কাজ পেয়েছে একই ঠিকাদার সংস্থা। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস করা কাজ নিয়েও বেনিয়ম ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। ফের বিতর্কের মাঝে আসানসোল-পুরুলিয়া রাজ্য সড়ক। ঘটনার জানাজানি হতে প্রশাসনিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনার জেরে পদক্ষেপের আশ্বাস জেলাশাসকের। জেলাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ওই রাস্তার সংস্কারের কাজের শিলান্যাস করেছেন। ওয়ার্কঅর্ডারও ইস্যু হয়েছে। ওই রাস্তার জন্য পৃথক কোনও ওয়ার্কঅর্ডার দেওয়া হয়েছে কি না তা নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে রিপোর্ট নেব। প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। এনিয়ে আসানসোলের পূর্ত দপ্তরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রুপেশ বারুইকে একাধিক বার ফোন করলে তিনি অন্য মিটিংয়ে ব্যাস্ত আছেন বলেই বার বার জানান।
আসানসোল-পুরুলিয়া রাজ্য সড়ক। নামেই সড়ক কিন্তু পিচের অস্তিত্ব নেই! রাস্তার মাঝে বিশাল, বিশাল গর্ত। প্রাণ ওষ্ঠাগত সাধারণ মানুষের। বছরভর এই রাস্তা জোড়াতাপ্পি দিয়ে সংস্কার করা হয়। কয়েকদিন পরেই ফের উঠে যায় সেই পিচ। লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় হয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। অনেকে এর মধ্যে আবার দুনীর্তির অভিযোগও তোলেন। এবার সেই রাস্তা সংস্কারের জন্য একই মাসে দু’টি কোটি কোটি টাকার ওয়ার্কঅর্ডার বের হওয়া নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, পূর্ত দপ্তরের ২০ আগস্টের টেন্ডার কমিটির মিটিংয়ে একটি কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেখানে জলের পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য যে রাস্তা খারাপ হয়েছে, তার সংস্কারের জন্য প্রায় তিন কোটি ০৫ লক্ষ ২ হাজার ৯৯১ টাকার ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয় আসানসোলের কল্যাণপুর হাউসিং এস্টেটের একটি ঠিকাদার সংস্থাকে। ২৯ আগস্ট আরও একটি ওয়ার্কঅর্ডার বের হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় রাস্তার কাজের জন্য ১৯ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকার টেন্ডার অ্যামাউন্টের উপর আগের সংস্থাকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। একই রাস্তার উপর একই মাসে কী ভাবে দু’টি ওয়ার্কঅর্ডার বের হল, তা নিয়ে অনেকেই সরব হয়েছেন। যদিও পূর্ত দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, দু’টি পৃথক কাজ। একটি কাজ রাস্তা দৃঢকরণের আর অন্যটি যেখানে জলের পাইপ লাইন গিয়ে ক্ষতি হয়েছে সেখানকার। যদিও স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, এক কাজ করেই দু’বার টাকা তোলার জন্যই এই ব্যবস্থা। কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার বলেন, এই রাজ্যে সবকিছুতেই সাধারণ মানুষের টাকা লুট হচ্ছে। প্রশাসন বিষয়টি সংশোধন করুক।-নিজস্ব চিত্র