• জেলায় প্রথম দিনের পরীক্ষা মিটল নির্বিঘ্নে, নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে খুশি উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়ারা
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: সোমবার বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও আরামবাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষার প্রথম সেমেস্টারের প্রথম দিনের পর্ব নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগও শোনা যায়নি। এবারই প্রথম ওএমআর শিটে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিয়েছে। 

    এদিন সকালে বাঁকুড়ার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে ঢোকার সময় পড়ুয়াদের চোখেমুখে কিছুটা চিন্তার ছাপ লক্ষ্য করা যায়। যদিও পরীক্ষার শেষে তারা হাসিমুখেই কেন্দ্র থেকে বের হয়। বাঁকুড়া শহরের পরীক্ষার্থী মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এতদিন বছরে একবারই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হতো। এবার তা দু’দফায় হচ্ছে। ফলে একবারে গোটা বই মনে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়নি। অর্ধেক বই পড়ে ভালোভাবেই পরীক্ষা দিয়েছি। বিষ্ণুপুরের বিদ্যুৎ ঘোষ বলে, একাদশ শ্রেণিতেও এভাবে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তবে জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষায় বসার আগে কিছুটা টেনশন হচ্ছিল। পরীক্ষা ভালো হয়েছে। 

    বেলিয়াতোড়ের বৃন্দাবনপুর অঞ্চলে শালি নদীর উপরে কজওয়ে বসে গিয়ে একাধিক গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এদিন বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় স্পিডবোটে চাপিয়ে নদীপাড়ের রাউতোড়া, কানাই, নামাই, ভৈরববাটি গ্রামের পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তথা পরীক্ষা আহ্বায়ক পীযূষকান্তি বেরা বলেন, প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে মিটেছে। এদিন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। কোনও পরীক্ষার্থীর অসুস্থ হওয়ার ঘটনাও ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, এবারই প্রথম ওএমআর শিটে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিয়েছে। তা নিয়ে কারও কোনও সমস্যা হয়নি। 

    পুরুলিয়া জেলাতেও প্রথম দিন নির্বিঘ্নে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন হল। নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে খুশি পরীক্ষার্থীরা। মানভূম ভিক্টোরিয়া স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দেবব্রত বর্ধন বলেন, ওএমআর শিটে যাতে কোনও ভুল না হয়, সেব্যাপারে স্যারেরা বারংবার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। সিলেবাসের বাইরে প্রশ্ন আসেনি। লাগদা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী রাহুল পরমানিক বলেন, প্রথমবার এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিলাম। প্রশ্নও খুব ভালো এসেছে।

    অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের পর হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সোমবার মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেয় মানবাজারে গার্লস স্কুলের ছাত্রী সীমা মাহাত। তার পরীক্ষার সিট পড়েছিল মানবাজার রাধামাধব ইন্সটিটিউটে। কয়েকদিন আগেই পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে তার অপারেশন হয়। সেখানে থেকে তাকে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এদিন সেখানেই বসে সে পরীক্ষা দেয়।

    এদিন আরামবাগ মহকুমাতেও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ছাত্রী পরীক্ষা দেয়। জানা গিয়েছে, আরামবাগের হাটবসন্ত হাইস্কুলের ওই ছাত্রীর পরীক্ষার শিট পড়েছিল আরামবাগ হাইস্কুলে। রবিবার বিকেলে বাড়িতে সে সাপের কামড়ে জখম হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরিস্থিতির কথা স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের হুগলির যুগ্ম আহ্বায়ক উৎপল রক্ষিত বলেন, ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। সে পরীক্ষায় বসার আর্জি জানিয়েছিল। সেইমতো এদিন পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সামগ্রিকভাবে জেলায় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষার্থীরাও পরীক্ষা দিতে পেরে খুশি।
  • Link to this news (বর্তমান)