• খানাকুলে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপরে বসে গেল কাঠের সেতুর একাংশ, বন্ধ হাওড়া ও হুগলির সঙ্গে গাড়ি চলাচল
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: পুজোর মুখে ফের সেতু বিপর্যয়। এবার খানাকুলের হরিশচকে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর সাজুর ঘাটের কাঠের সেতুর একাংশ বসে যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তার জেরে সোমবার সকাল থেকে সেতুতে তিন ও চারচাকা গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই সেতু দিয়ে হুগলির সঙ্গে হাওড়া জেলার যাতায়াত সহজ হয়। কিন্তু, পুজোর মুখে সেতু বিপর্যয়ের জেরে বিপাকে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তবে এদিন থেকেই সেতুর মেরামতির কাজও শুরু হয়েছে। 

    খানাকুল-২ বিডিও মহম্মদ জাকারিয়া বলেন, রবিবার রাতে কোনও মাছের গাড়ি পারাপারের পর সেতুর একাংশ বসে গিয়েছে বলে শোনা যায়। সেইজন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেতুতে মেরামতির কাজও শুরু হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি। 

    স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর ওই কাঠের সেতু দিয়ে চলাচলের জন্য শাবলসিংহপুর পঞ্চায়েতের তরফে টেন্ডার করা হয়। যাত্রীদের টোল দিয়ে সেতু পারাপার করতে হয়। সেতুর উপর দিয়ে তিন ও চার চাকার গাড়ি ও ছোট পণ্যবাহী গাড়িও চলাচল করে। হঠাৎ সেতুর একাংশ বসে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে।

    শাবল সিংহপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রাকিবুল হোসেন বলেন, পঞ্চায়েতের তরফে গত বছর নভেম্বর মাসে টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। যাত্রী পারাপার চলছিল। আচমকা সেতুর একাংশ বসে গিয়েছে। আমরা বলেছি যাতে দ্রুত সেতু মেরামতি করে বাসিন্দাদের যাতায়াত পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায়, তা নিশ্চিত করতে। ইতিমধ্যেই কাজও শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের ঝুঁকি এড়াতে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

    ঘাটের মালিক সাহেব হাজরা বলেন, গত কয়েকমাস ধরে সেতুতে যাতায়াত চলছে। আগে থেকেই সেতুর একাংশ বেহাল হয়েছিল। মেরামতির পরিকল্পনা নেওয়া হলেও নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় তা করা যায়নি। তারমধ্যেই রবিবার রাতে সেতুর মাঝামাঝি অংশের কিছুটা বসে যায়। দ্রুত কাজ শুরু করা হচ্ছে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুটি লম্বায় কয়েকশো মিটার। চওড়ায় প্রায় ১০ ফুট। খানাকুলের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশের বাসিন্দারাও আজগুবিতলা, সাজুর ঘাট হয়ে অনায়াসে হাওড়া জেলা ও কলকাতায় যাতায়াত করেন। যাতায়াতে সময়ও কম লাগে। কিন্তু, গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতু বসে যাওয়ায় কলকাতা যাতায়াত নিয়ে সমস্যা শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের চাঁপাডাঙা হয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে। এছাড়া কোনও নির্মাণ সামগ্রী বা ভারী পণ্য পরিবহণেও বিপাকে পড়তে হবে বাসিন্দাদের। আপাতত সাজুর ঘাট দিয়ে শুধুমাত্র হেঁটে, সাইকেল ও বাইক চলাচলে ছাড় দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা দিগন্ত মণ্ডল বলেন, গাড়ি নিয়ে বিশেষ কোনও কাজে খানাকুল বা রাজহাটি যাতায়াতে সমস্যা হবে। তবে বাইক যেহেতু চলছে, তা নিয়েই যাতায়াত করব।

    উল্লেখ্য, গতমাসে আরামবাগে দ্বারকেশ্বর নদের উপর রামকৃষ্ণ সেতুতে বিপর্যয়ের জেরে এখনও বাস সহ ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আরামবাগের সঙ্গে কালীপুরের মধ্যে টোটোর মাধ্যমে কাটাসার্ভিস চলছে। তার জেরে নিত্যদিন সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা।
  • Link to this news (বর্তমান)