অভিজাত আলিপুর ও বর্ধমান রোডের ভগ্নদশা, এক বর্ষায় তিনবার ভাঙল মোমিনপুর মোড়ের রাস্তা, যানজটে বিরক্ত যাত্রীরা
বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জুন থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। তিন মাসের কিছু বেশি সময় ধরে লাগাতার বৃষ্টি চলছে। এই সময় তিনবার ভাঙল দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা মোমিনপুর মোড়। ভাঙতে ভাঙতে যখন একফুটের মতো গর্ত তৈরি হচ্ছে, তখন হচ্ছে মেরামত। কিন্তু তারপর এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই একই অবস্থা। ফের রাস্তা ভাঙছে। আবার দুর্বিষহ অবস্থা ডায়মন্ড হারবার রোড ও জাজেস কোর্ট রোডের সংযোগস্থলের। অভিযোগ, খানাখন্দগুলি জলে ভর্তি। ছোট গাড়ি নিয়ে এ রাস্তায় যেতে হলে মনে হবে জলপথে নৌকাবিহার হচ্ছে।
জুন মাসে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। তারপর জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই ভাঙতে শুরু করে ডায়মন্ড হারবার রোডের ওই অংশ। বিরাট আকারের গর্ত তৈরি হয়। তার জেরে যানবাহনের গতি কমে। জ্যামের কারণে গাড়ির লাইন পৌঁছে যায় তারাতলা ব্রিজ পর্যন্ত। দেড় কিলোমিটার রাস্তা পেরতে প্রায় ৪০ মিনিট কেটে যায় নিউ আলিপুর, বেহালা, সখেরবাজার, পর্ণশ্রী, ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দাদের। জুলাইয়ের গোড়ায় প্রথমবার সারানো হয়েছিল রাস্তাটি। নতুন পিচ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই তা উঠে যায়। বেরিয়ে পড়ে রাস্তায় কঙ্কালসার দশা। এরপর রাতে যান নিয়ন্ত্রণ করে দ্বিতীয়বারের জন্য সংস্কার করা হয় রাস্তাটির। মোমিনপুর মোড় থেকে লালবাতি মোড় যাওয়ার পথের একাংশ বাঁধানো হয়েছিল ইট দিয়ে। ৩০ মিটার দীর্ঘ সেই অংশটি ছাড়া গোটা ক্রসিংয়ের অবস্থা এখন বেহাল। নিত্যদিন কার্যত নাকানিচোবানি খাচ্ছেন হাজরা, গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, ভবানীপুরগামী বাসিন্দারা।
বেহালা পাঠকপাড়ার বাসিন্দা রণজয় মিদ্দা। তিনি বলেন, ‘রোজ ভবানীপুরে অফিস যাওয়ার সময় মোমিনপুর মোড় পেরতে নাভিশ্বাস উঠছে। বড় আকারের গর্ত। একটু অসাবধান হলে বাইক ধাক্কা খাচ্ছে রাস্তায়। বৃষ্টি হলে ঘুরে নিউ আলিপুর হয়ে যেতে হচ্ছে অফিস। ৪৫ মিনিট আগে বেরতে হচ্ছে।’ ঠাকুরপুকুরের ব্যবসায়ী অতীন দে। রোজ বড়বাজার থেকে মালপত্র আনতে যান। তিনি বলেন, ‘টাকা বাঁচানোর জন্য যাওয়ার সময় বাসে যাই। মোমিনপুর পেরতেই লাগছে প্রায় ১৫ মিনিট। বাসে গেলে মনে হয়, এই উল্টে গেল বলে। বাস তো নয় যেন পেন্ডুলাম।’
উল্লেখ্য, এই ক্রসিংয়ের কাছেই একাধিক হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ রয়েছে। ফলে যানজটে পড়ছে অ্যাম্বুলেন্স, স্কুলের বাস। দক্ষিণমুখী যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে আপ ও ডাউন দুই লেন দিয়ে উত্তরমুখী গাড়ি চলাচল করাচ্ছে ট্রাফিক পুলিস। একই অবস্থা বর্ধমান রোড ও আলিপুর রোডেরও। শহরের এই অংশ অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত। সেখানে রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি বলে বারবার অভিযোগ। পুজোর আগে এই রাস্তা, সংস্কার হবে কি? প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা।