• ক্লাবের বেআইনি নির্মাণ ভাঙছে প্রশাসন, পুজো বন্ধের আশঙ্কায় শিবপুরের ক্লাব, না ভাঙার আকুতি স্থানীয় মহিলাদের
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাইকোর্টের নির্দেশে হাওড়ার শিবপুরে নিমতলা এলাকায় একটি ক্লাবের বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। সোমবার স্থানীয় থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাওড়া পুরসভার আধিকারিকরা ক্লাবের বাকি অংশ ভাঙতে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। স্থানীয় মহিলারা একত্রিত হয়ে ক্লাব ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রাখার আর্জি জানান। এদিন শেষমেশ কাজ বন্ধ রাখা হলেও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ক্লাবের দুর্গাপুজো নিয়ে এবার চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।

    ৫৮ বছর ধরে দুর্গাপুজোর আয়োজন করে আসছে শিবপুর নিমতলা বারোয়ারি। তারও বেশি সময় ধরে সেখানে কালীপুজো হচ্ছে। প্রায় ২৯ কাঠা জমির সামনের অংশে রয়েছে মাঠ। পিছনের দিকে দোতলা ক্লাবঘর ও একটি মন্দির। বছর চারেক আগে মন্দিরের অংশ বাড়িয়ে নির্মাণকাজ করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। পাশেই তৈরি হয় ভোগ রান্নার ঘর। তারপর থেকে এই স্থায়ী কংক্রিটের মন্দিরেই দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠের পিছনের অংশে তৈরি হওয়া ক্লাবঘর ও মন্দিরের নির্মাণ সম্পূর্ণ বেআইনি বলে হাইকোর্টে মামলা করেন হাওড়ার এক ব্যক্তি। তারই ভিত্তিতে সেই নির্মাণকে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই অনুযায়ী গত দু’মাস ধরে একটু একটু করে নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দোতলা ক্লাবঘরের উপরের অংশ ও ভোগ রান্নার ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যেই চলছে এ বছর দুর্গাপুজোর আয়োজন। সোমবার সকালে চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ ও হাওড়া পুরসভার আধিকারিকরা ক্লাবের নির্মাণ ভাঙতে গেলে বিপত্তি বাঁধে। এলাকায় জড়ো হন স্থানীয় কয়েকশো মহিলা। প্রশাসনকে ঘিরে ধরে তাঁরা বারবার অনুরোধ জানাতে থাকেন, ‘অন্তত এবছরের মতো পুজোটা করতে দিন। পুজোর পর বাকি অংশ ভেঙে ফেলুন।’ স্থানীয়দের বিরোধিতায় এদিন কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় প্রশাসন। 

    ঝিমলি চট্টোপাধ্যায়, প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যায়, সীমা দাস বলেন, ‘কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, মানতেই হবে। প্রশাসন তাদের মতো কাজ করুক। কিন্তু এত বছর ধরে আমরা পাড়ার বাসিন্দারা মিলে পুজো করছি। এবছর সব আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ। প্রতিমাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। অন্তত পুজোটুকু যাতে হয়, সেজন্য আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। ক্লাব সদস্যরা বলেন, ‘এ বছর বাংলার আদিবাসীদের জীবনযাত্রা নিয়ে আমাদের থিম ছিল। সেভাবেই মাঠটি সাজিয়েছিলাম। জানি না পুজোটা হবে কি না।’ হাওড়া সিটি পুলিশ ও হাওড়া পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ক্লাবের বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হচ্ছে। পুজোর আগেই বাকি নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে কি না, সেব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি প্রশাসন।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)