• 'আমাকে বাঁচাও বাবা', মেয়ের আর্তনাদ! প্রকাশ্যে পুড়িয়ে দিল দুষ্কৃতীরা! নিজেই দগ্ধ শরীরে স্কুটি চালিয়ে হাসপাতালে গেলেন যুবতী, নারী হত্যায় ফের প্রশ্নে...
    আজকাল | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশ আবারও মর্মান্তিক ঘটনার শিরোনামে। ফররুখাবাদ জেলায় সম্প্রতি এক হাড়হিম ঘটনা ঘটেছে। খবর অনুযায়ী, ৩৩ বছর বয়সী এক বিবাহিত যুবতী নিশা সিংহকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, নিশা সিংহকে দীর্ঘ দুই মাস ধরে উত্যক্ত করছিলেন দীপক নামে এক অভিযুক্ত। নিশা তাঁর বাবার বাড়িতে এসেছিলেন। ঘটনার দিন তিনি একজন ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিলেন। পথে দীপক তাঁকে আচমকা থামিয়ে কথা বলার জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে তাঁদের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর দীপক তার বন্ধুদের নিয়ে নিশার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এরপর অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়৷ এই ঘটনায় গোটা রাজ্য স্তব্ধ। 

    আগুনে পুড়ে চরম যন্ত্রণায় নিশা তাঁর স্কুটিতে চেপে পারিবারিক চিকিৎসকের চেম্বারে পৌঁছন। চিকিৎসকের কাছ থেকে ফোন পেয়ে তাঁর বাবা বলরাম সিং তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে পৌঁছন। তিনি জানান, 'ডাক্তার আমাকে ফোন করে বলেন তাড়াতাড়ি আসুন, আপনার মেয়ে খুব খারাপ অবস্থায় আছে। আমি গিয়ে দেখি সে জ্বলন্ত অবস্থায় ছটফট করছে। চিৎকার করে বলছে, ‘পাপা আমাকে বাঁচাও, পাপা আমাকে বাঁচাও’। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, দীপক আগুন দিয়েছে। দীপক দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে মানসিকভাবে নির্যাতন করছিল, কথা বলতে জোর করত।' 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিশাকে প্রথমে অদূরে এক স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে অবস্থা সংকটজনক বুঝে লোহিয়া হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখান থেকে আবার সাইফাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মাঝপথে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত যুবতীর বাবা বলরাম সিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের ধরতে চারটি দল গঠন করা হয়েছে।

    ঘটনার জেরে নিশার বোন নীতু সিং বলেন, তিনি পুরো বিষয়টি জানতেন, কিন্তু কখনও মা-বাবাকে বলেননি এ বিষয়ে। 'সে বলত দীপক তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করত, কথা বলার জন্য ক্রমাগত চাপ দিত। সে এতে রাজি ছিল না। মা এসবের কিছুই জানতেন না, আমি একাই পুরোটা জানতাম।'

    নিশার স্বামী অমিত চৌহান বলেন, 'সে আমাকেও কোনওদিন এসব বিষয়ে কিছু বলেনি। আমরা আগের রাতে কথা বলেছি, ঘটনার দিন সকালেও কথা হয়েছে, কিন্তু সে কিছুই বলেনি। এটিই সবচেয়ে বড় দুঃখ যে সে কিছুই না জানিয়ে একা একা যন্ত্রণা সহ্য করে গিয়েছে।' 

    এই নৃশংস ঘটনা উত্তর প্রদেশে নারী নির্যাতন ও হেনস্তার প্রকট চিত্র তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। যেখানে একজন নারী নিজের চরম দুর্দশার কথা পরিবার, এমনকী তাঁর স্বামীকে পর্যন্ত জানাতে পারেননি এবং অবশেষে নির্মমভাবে প্রাণ হারালেন। অভিযুক্তদের তল্লাশি চলছে। দ্রুত এর ফয়সালা হবে৷ প্রশাসন দোষীদের যত শীঘ্র সম্ভব গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে৷ 
  • Link to this news (আজকাল)