বাজেয়াপ্ত করা জিনিসপত্র উধাও হয়ে গিয়েছে খাস থানা থেকেই। এই ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের উষ্মার মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশ। সম্প্রতি মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, “বাজেয়াপ্ত হওয়া জিনিসপত্র কোথায় আছে, সেই তথ্য থানাতেই থাকবে। থানার মালখানা থেকে জিনিস গায়েব হয়ে যাবে, এটা কী ভাবে সম্ভব?” বিচারপতির নির্দেশ, দু’সপ্তাহের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের খড়দহ থানাকে। পরবর্তী শুনানি ১১ সেপ্টেম্বর। সন্তোষজনক রিপোর্ট না-পেলে আদালত ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মাকে তদন্তের দায়িত্ব দেবে বলেও বিচারপতি মন্তব্য করেছেন।
কোর্টের খবর, ১৯৯৩ সালে নিরুদ্দেশ হন শশাঙ্কশেখর পাল। সে সময় তিনি খড়দহে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। খড়দহ থানায় অভিযোগ করেন স্ত্রী দীপ্তি পাল। সে সময় পুলিশ ওই বাড়ি থেকে ব্যাঙ্কের পাসবই, কিসান বিকাশ পত্র, সোনা রুপোর গয়না-সহ নানা সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে। স্বামীকে খুঁজে না-পাওয়ায় ২০০৫ সালে আইনি উত্তরাধিকার সূত্রে বাজেয়াপ্ত সামগ্রী ফেরত পেতে খড়দহ থানায় যান দীপ্তি। অভিযোগ, পুলিশ জানায় যে ওই সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে না। দীপ্তি মামলা করলে ২০২২ সালে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারকের কাছে আবেদন করতে হবে। নিম্ন আদালত পুলিশকে ওই জিনিসপত্র ফেরাতে নির্দেশ দেয়।
হাই কোর্টে দীপ্তির আইনজীবী অরূপকৃষ্ণ দাসের অভিযোগ, কোর্টের নির্দেশের পরেও পুলিশ জিনিসপত্র দেয়নি। রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, ২০২২ সালে মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, “বর্তমান পুলিশ আধিকারিকেরা সহকর্মীদের (যাঁরা উধাও হওয়ার সময়ে থানায় ছিলেন) আড়াল করার চেষ্টা করছেন। দু-এক জনকে আড়াল করতে প্রতিষ্ঠানকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে।... বাজেয়াপ্ত সামগ্রী উদ্ধার না-করতে পারলে ক্ষতিপূরণদিতে হবে।”