জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে নথিবদ্ধ থাকা প্রামাণ্য নথি-তালিকার বাইরেও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত অন্য কী ধরনের নথি বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা যায়, তা জানতে চাইল দিল্লির নির্বাচন সদন। ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু করার আগে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সব মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) বৈঠকে ডেকেছেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। থাকবেন বাকি দুই নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনের পদস্থ কর্তারা। সেই বৈঠকেই অন্যান্য অনেক কিছুর সঙ্গে জানাতে হবে রাজ্যভিত্তিক ভাবে বিকল্প নথির প্রস্তাব। সূত্রের দাবি, এ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসনগুলির থেকেও প্রস্তাব চেয়েছে কমিশন। যদিও এখনও কোনও প্রস্তাব আসেনি বলেই খবর। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বাকি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে আধার নথি হিসাবে প্রথম থেকেই গ্রাহ্য হবে কি না, তা-ও এখনই স্পষ্ট নয়।
কমিশনের খাতায় নথিভুক্ত থাকা ১১টি নথি দেখিয়ে ভোটার হিসেবে যোগ্যতা প্রমাণ করা যায়। তার মধ্যে রয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য বা কোনও সরকারি সংস্থার পেনশন গ্রাহকদের পরিচয়পত্র, পেনশন পেমেন্ট অর্ডার (পিপিও), কেন্দ্র-স্থানীয় প্রশাসন-ব্যাঙ্ক-ডাকঘর-এলআইসির দেওয়া কোনও পরিচয়পত্র, শংসাপত্র বা নথি, জন্মের শংসাপত্র, পাসপোর্ট, মাধ্যমিক বা শিক্ষাগত শংসাপত্র, রাজ্য প্রশাসনের দেওয়া স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র, বনের অধিকারের নথি, তফসিলি জাতি-জনজাতি-ওবিসি শংসাপত্র, এনআরসি (যেখানে প্রযোজ্য) নথি, সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক নথি, সরকারের দেওয়া জমি বা বাড়ির নথি।
এর বাইরে আর কী ধরনের নথি তালিকাভুক্ত করা যায়, তা-ই পশ্চিমবঙ্গের কাছে জানতে চেয়েছে কমিশন। সূত্রের দাবি, রাজ্য তো বটেই, প্রস্তাব চেয়ে বার্তা পাঠানো হয় জেলাশাসকদেরও। কিন্তু এখনও কোনও বিকল্প নথির প্রস্তাব তাঁরা পাননি বলেই দাবি কমিশন-কর্তাদের। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, বিহারের এসআইআর-এর সময়ে সে রাজ্য প্রশাসনের প্রস্তাবিত বংশলতিকা সংক্রান্ত শংসাপত্রকে বিকল্প নথি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল কমিশন। তামিলনাড়ু সরকারও এমন বিকল্প নথির প্রস্তাব করেছে। এ রাজ্য তেমন নথির প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত না করলে কমিশনের তালিকাভুক্ত নথিগুলিই মেনে চলতে হবে ভোটারদের। সূত্রের খবর, নথি সংক্রান্ত রাজ্যভিত্তিক বিজ্ঞপ্তি জারি করার সময়ে চূড়ান্ত নথির তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।
এক কর্তার কথায়, ‘‘এমনিতেই এ রাজ্যে বেশ কয়েক লক্ষ সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। রয়েছেন লক্ষাধিক পেনশনভোগীও। তা ছাড়া যে নথির তালিকা এখন কার্যকর রয়েছে, তা দিয়েই রাজ্যের তালিকাভুক্ত ভোটারদের অন্তত ৭০%-এর যাচাই সম্ভব। তাও অতিরিক্ত আর কোনও নথির প্রস্তাব রাজ্যের তরফে থাকলে, তা বিবেচনা করবে কমিশন।’’
এ রাজ্যের ক্ষেত্রে আধার কার্ড নথি হিসাবে গ্রাহ্য হবে কি না, তা নিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর সিইও-দের সঙ্গে কমিশনের ‘ফুল বেঞ্চের’ বৈঠকে ইঙ্গিত মিলতে পারে বলে অনুমান।