সরকারি মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে কোনও বেসরকারি সংস্থা কোচিং করাতে পারবে না। মাসকয়েক আগে স্পষ্ট এই নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য ভবন। কিন্তু তার পরেও সেই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের সভাগৃহে বেসরকারি সংস্থার কোচিংয়ের ভিডিয়ো (আনন্দবাজার পত্রিকা অবশ্য এর সত্যতা যাচাই করেনি) প্রকাশ্যে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে রাজ্যের প্রথম সারির একটি মেডিক্যাল কলেজে বেসরকারি সংস্থা কোচিংয়ের আয়োজন করল?
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হলেও সোমবার একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন এনআরএসের অধ্যক্ষ। সমস্ত বিভাগীয় প্রধান, নার্সিং সুপার, স্টুডেন্টস কাউন্সিল এবং আধিকারিককে পাঠানো ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, এনআরএস চত্বরে কোনও ভাবেই বেসরকারি সংস্থার কোচিং ক্লাস কিংবা ওই ধরনের কোনও কাজ করা যাবে না। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘সরকারি মেডিক্যাল কলেজে কী ভাবে কোচিং ক্লাস হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
সূত্রের খবর, গত জুন মাসেও অভিযোগ উঠেছিল, এনআরএসের সভাগৃহে নিট-পিজি-র প্রস্তুতির জন্য ওই মেডিক্যাল কলেজ-সহ অন্যান্য কলেজের পড়ুয়াদেরও কোচিং করাচ্ছে শহরের একটি বেসরকারি সংস্থা। সেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, সরকারি মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো ব্যবহার করে বেসরকারি কোচিং বেআইনি। এবং তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এর পরেও গত ৬ সেপ্টেম্বর এনআরএসের বিবেকানন্দ সভাগৃহে পড়ুয়াদের নিয়ে কোচিং হয়েছে বলে অভিযোগ।
এনআরএস সূত্রের খবর, বাইরের কোনও সংস্থা সভাগৃহ ভাড়া নিলে এক দিনের জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের বিল, সাফাইয়ের খরচও দিতে হয়। এর জন্য সরকারি রসিদ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। কিন্তু তাঁরা সরাসরি কোনও ভাড়া বা অনুমতি নেননি বলেই দাবি ওই বেসরকারি কোচিং সংস্থার ম্যানেজার সুমিত মিদ্যার। তাঁর কথায়, ‘‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি জোগাড় করেছিল। সেই মতো আমরা ক্লাস করিয়েছি। সংস্থা কখনও সরাসরি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে না। ’’ অন্য দিকে, স্টুডেন্টস কাউন্সিলের তরফে অমৃত আর্যের দাবি, ‘‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল কাউকে কোনও অনুমতি দেয় না। অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া হলে তিনি অনুমতি দেন। তবে, সভাগৃহে কোনও ক্লাস হয়নি। তা-ও এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’’