শুভ্রজিৎ মিত্রর পরিচালনায় ‘দেবী চৌধুরাণী’ মুক্তির আগে একান্ত আড্ডায় নিজের জার্নি শেয়ার করলেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।
• স্কুলে আপনার প্রিয় বিষয় কী ছিল?
বাংলা।
• আর ইতিহাস?
ইতিহাসও ভালো লাগত। কিন্তু খ্রিষ্টাব্দগুলো ভুলে যেতাম। ‘দেবী চৌধুরাণী’ করতে গিয়ে ইংরেজির ১৭৭০ আর বাংলার ১১৭৬ মুখস্থ করে নিয়েছি (হাসি)।
• নিজেকে তৈরি করলেন কীভাবে?
প্রথমে মনে হয়েছিল, বড় দায়িত্ব। উত্তীর্ণ হতেই হবে। যাতে দর্শক আমাকেই দেবী চৌধুরাণী ভাবেন। এমন একটা চরিত্র প্রতিটি অভিনেতার স্বপ্ন হতে পারে। আমরা সচরাচর ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করার ঝুঁকি নিই না। কারণ অনেক গবেষণা থাকে। এই ছবিটার ক্ষেত্রে পরিচালককে ধন্যবাদ দেব। উনি এত বড় ঝুঁকি নিয়েছেন। তলোয়ার চালানো, ঘোড়া চালানো— সব কিছুই শিখতে হয়েছে।
• ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন?
না, পড়ে যাইনি। আমি পশুপাখি ভালোবাসি। ঘোড়াটা বুঝতে পেরেছিল বোধহয় (হাসি)। তবে ভয় লাগছিল। তলোয়ার চালানো শিখতেও ভয় লেগেছিল। খুব এনজয় করেছি জার্নিটা। সঙ্গে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তো ছিলেনই...।
• এই ছবির ভবানী পাঠক?
হ্যাঁ, আসলে বুম্বাদা আমাদের অভিভাবক। আমার প্রথম ছবি ‘মায়ার বাঁধন’ বুম্বাদার সঙ্গে। যেখানে উনি আমার বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিতে দর্শক আমাদের দুই চট্টোপাধ্যায়কে একটু অন্যভাবে দেখবেন, এটা নিশ্চিত।
• ছবি মুক্তির জন্য ধৈর্য ধরতে হয়েছে তো অনেক?
সত্যিই অনেক দিনের অপেক্ষা ছিল। তবে এত বড় ছবি ক’টা হয় বলুন? ম্যানিফেস্ট করতাম, এত যখন খেটেছি, ছবিটা ভালো করে রিলিজ হবে। সেটাই হচ্ছে। ধৈর্য থাকলে এগতে পারবে, এটা বাবা শিখিয়েছে।
• বাবা ‘দেবী’কে দেখে কী বললেন?
বাবা শ্যুটিং দেখে বলেছেন, ‘দারুণ। আমি অপেক্ষা করছি কবে তোর পাশে বসে বড় স্ক্রিনে ছবিটা দেখব।’ উনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন। আমার দাদু ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। উনি বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন।
• আর আপনার ছেলের মতামত?
ঝিনুক আমার বড় সমালোচক। দেবীকে নিয়ে ও বলেছে, ‘মা এই ছবিটা তোমাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাবে।’
• টলিউডে তো আপনি ছোট থেকে বড় হলেন?
একদম ঠিক (হাসি)।
• অনেক আগে এই ধরনের চরিত্র পাওয়া উচিত ছিল বলে মনে হয় না?
কারও সবকিছু তাড়াতাড়ি হয়। কারও ধীরে হয়। আমি হয়তো দ্বিতীয় দলের মানুষ। আমি তাতেও খুশি। ধৈর্য এখানেও মূল কথা।
• সুচিত্রা সেনের ‘দেবী চৌধুরাণী’ দেখেছেন?
ছোটবেলায় দেখেছিলাম। ১৯৭৪ সালের ছবি। পুরোপুরি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি। আমাদের ছবিটা উপন্যাস এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আর্কাইভে যা আছে, সেই ইতিহাস একসঙ্গে করে তৈরি।
• তুলনার ভয় হচ্ছে?
কেউ তুলনা করলে আমার কিছু বলার নেই। এটা ২০২৫। ওটা ১৯৭৪। অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। নামটা এক হলেও সম্পূর্ণ আলাদা ছবি তৈরি হয়েছে।
• পুজোর বাকি ছবিগুলোর সঙ্গে ‘দেবী চৌধুরাণী’র প্রতিযোগিতা কীভাবে দেখেন?
১০ বছর পর পুজোয় আমার ছবি রিলিজ হচ্ছে। এটা প্রতিযোগিতা নয়, সেলিব্রেশন।
• নতুন কোনও ছবি শুরু করছেন?
জীতুর (কামাল) সঙ্গে একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার করছি।