• এবার মতুয়া ভোটব্যাঙ্কই মূল লক্ষ্য অভিষেকের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। পাশাপাশি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় প্রভূত উন্নয়ন সত্ত্বেও বিজেপির ভোট কেন বেড়েছে, জেলাওয়ারি বৈঠকে সেই প্রশ্নই তুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার জোড়া বৈঠক ছিল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের। প্রথমার্ধে বনগাঁ ও দ্বিতীয়ার্ধে দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় বিশাল অঙ্কের মতুয়া ভোট রয়েছে। পাশাপাশি দুই সাংগঠনিক জেলাতেই রয়েছে গেরুয়া শিবিরের বেশ দাপটও। এমতবস্থায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে মতুয়াগড়ে বিশেষ নজর শাসকদলের।

    দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে অভিষেকের মূল বার্তা— অস্বস্তি সরিয়ে রেখে একসঙ্গে লড়াইয়ে নামতে হবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, কোনো বেফাঁস মন্তব্য একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় সাংসদ মহুয়া মৈত্রর একটি বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে মতুয়া মহাসঙ্ঘে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। সামগ্রিক ইস্যুতে দলীয় সাংসদ তথা ঠাকুরবাড়ির সদস্য মমতাবালা ঠাকুর প্রকাশ্যে মহুয়ার বিরুদ্ধাচারণ না করলেও, তাঁর অনুগামীরা ঘরোয়া আলোচনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। সেই অস্বস্তি কাটিয়ে ওঠার দিকেই জোর দিয়েছেন অভিষেক। দলের নেতাদের তাঁর নির্দেশ, ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক লড়াইয়ে তৃণমূল থাকবে না। রাজনৈতিক লড়াইকে পারিবারিক দ্বন্দ্বের সঙ্গে না মিশিয়ে প্রচারে নামতে হবে। মতুয়াদের পাশে তৃণমূল ছিল, আছে এবং থাকবেও।

    পাশাপাশি নাগরিকত্ব জটেও ভুগছেন মতুয়ারা। কেন্দ্র সিএএ-র মাধ্যমে তাঁদের নাগরিকত্ব প্রদানের আশ্বাস দিলেও, তার বাস্তব রূপায়ণ আদতে শূন্য। তা নিয়ে কেন্দ্রের ওপরও ক্ষুব্ধ তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে জীবনধারণের মান উন্নত হয়েছে তাঁদের। এখানেই অভিষেকের প্রশ্ন, ‘মতুয়ারা নাগরিকত্বের আশায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবেই আক্রান্ত হচ্ছেন। তৃণমূলের সঙ্গে মতুয়াদের ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কেন তার প্রতিফলন ভোটবাক্সে দেখা যায় না?’

    এরপরই সাংগঠনিক খামতি, মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখে একজোট হয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। জনসংযোগ ও উন্নয়ন প্রচারে জোর দেওয়ার পরামর্শ তাঁর। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় বনগাঁ উত্তর, দক্ষিণ ও গাইঘাটা বিধানসভা বিজেপির দখলে। ওই তিনটি বিধানসভা পুনরুদ্ধারের জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিনের দুই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ মমতা ঠাকুর, সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, মহিলা সভানেত্রী ইলা বাগচী, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সব্যসাচী ভট্ট, বিধায়ক বীণা মণ্ডল ও মধুপর্ণা ঠাকুর-সহ অন্যরা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)