বয়ঃসন্ধিতে নানা মানসিক চাপ, রাজ্যে পড়ুয়াদের মনোরোগের চিকিৎসায় বন্ধু ‘অন্বেষা’
প্রতিদিন | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অভিরূপ দাস: ২০২২ সালে দেশজুড়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছিল ১৩ হাজার ছাত্রছাত্রী। বাংলার ২০২৫ সালের তথ্য বলছে ১২ শতাংশ ছাত্রছাত্রী নানা কারণে আত্মহত্যা করতে চায়। মনোবিদরা বলছেন, মূল তিন কারণ পারিবারিক বিবাদ, অল্প বয়সে সম্পর্কে ভাঙন, মাদকাসক্তি। আত্মহত্যার প্রবণতা ঠেকাতে কাজ শুরু করেছে বাংলা। বাংলার প্রতিটি ব্লকে নিয়োগ করা হয়েছে অন্বেষা কাউন্সিলর। এই অন্বেষা কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু’দিন ব্লকে বসার জন্য। বাকি দিন তাঁরাও অন্যত্র গিয়ে মনোরোগের চিকিৎসা করবেন।
১০ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের সমস্যাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, ‘স্কুল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস প্রোগ্রামে’ প্রতিটি স্কুলের দু’জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কীভাবে শনাক্ত করা যাবে ছাত্রছাত্রীদের মনোরোগ। এই কর্মকাণ্ডে রাজ্য সরকার হাত মিলিয়েছে চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউটের সঙ্গে। গ্রামে-প্রত্যন্ত জেলায় তারা পাঠাচ্ছে মনোবিদ। ইতিমধে্যই দশ হাজার স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে তাদের মনের কষ্ট বুঝতে চাইছেন মনোবিদরা। বুধবার ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। তারই প্রাক্কালে চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউটের চিফ এক্সিকিউটিফ অফিসার ডা. ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ১৫ থেকে ২৯ এই বয়সের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সব চেয়ে বেশি। রাজ্য সরকারের সহায়তায় সরকারি স্কুলে সার্ভে করতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বলা হচ্ছে মোবাইল ব্যবহার কমাও। খেলাধুলো কর। গল্পের বই পড়। স্বাস্থ্যকর খাবার খাও। জাঙ্ক ফুড খাওয়া কমাও। টিফিনে আন বাড়িতে তৈরি খাবার। এমনভাবে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদেরও বলে। আর পরিবর্তনটা হয় সার্বিকভাবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার সমস্ত জায়গাতেই চলছে কাজ। রাজ্য সরকারের এই যৌথ অনুষ্ঠানে বয়ঃসন্ধির সমস্যা নিয়ে কাজ করেন ড. সান্ত্বনা অধিকারী। তাঁর কথায়, আত্মহত্যার শীর্ষে বাংলার পাঁচ জেলা কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, মেদিনীপুর। আত্মহত্যা ঠেকাতে চালু হয়েছে টোল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ১২১ ৫৩২৩।