• আচমকা আর্তনাদ! ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, পড়ে রয়েছে যুবকের নিথর দেহ, পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধুর কান্না, পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে রহস্য তুঙ্গে ...
    আজকাল | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশ আবারও খবরের শিরোনামে। গ্রেটার নয়ডার নলেজ পার্ক-৩ এলাকার এক বেসরকারি ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের হোস্টেল ঘরে একটি মর্মান্তিক ও রহস্যজনক ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি মঙ্গলবার সকালে ঘটে। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আগত ২২ বছর বয়সী এক এমবিএ ছাত্রকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মৃত পাওয়া যায়। একইসঙ্গে তাঁর এক বন্ধু গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হন। দুজনেই ওই ইনস্টিটিউটের ছাত্র এবং হোস্টেলের একই ঘরে থাকতেন।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে হোস্টেলের একটি ঘরে আলো জ্বলতে দেখে এক নিরাপত্তারক্ষী সেটি বন্ধ করতে যান। সে সময় তিনি ঘরের ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পান। তিনি দরজা খোলার চেষ্টা করেন, কিন্তু ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি। এরপর তিনি দ্রুত হোস্টেলের ওয়ার্ডেনকে বিষয়টি জানান এবং দুজনে মিলে দ্বিতীয় তলায় ব্যালকনির দিকে যান। ব্যালকনি থেকে ঘরের ভেতরে উঁকি দিয়ে তাঁরা দেখতে পান, দুই ছাত্র রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন।

    এই দৃশ্য দেখেই হোস্টেল কর্মীরা একটি মই এনে ব্যালকনিতে ওঠেন। জানালার কাঁচ ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেন তাঁরা। ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখতে পান একজন ছাত্র নিথর অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এবং অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একজন ছাত্রকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন এবং অপরজনকে সংকটজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

    ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ওই পিস্তলটি আহত ছাত্রের বাবার নামে নিবন্ধিত। খবর মারফত তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি খালি কার্তুজ এবং চারটি জীবিত গুলিও উদ্ধার করে।

    গ্রেটার নয়ডা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) বিবেক রঞ্জন রাই এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জানান, বর্তমানে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি কে গুলি চালিয়েছে। ঘরটি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল, যা ঘটনাটিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। এটি আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা, না কি ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালানোর ঘটনা - তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যায়নি।

    পুলিশ ইতিমধ্যেই ফরেনসিক দলকে ঘটনাস্থলে ডেকেছে। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা পিস্তলে কার আঙুলের ছাপ রয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহত ছাত্রের জবানবন্দি এখনও নেওয়া যায়নি, কারণ তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর।

    ঘটনার খবর পেয়ে হোস্টেলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ঘটনাটি ছাত্রদের মধ্যে ইতিমধ্যেই চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে এবং মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

    তবে এহেন মর্মান্তিক ঘটনায় এখনও অনেক প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে যেমন - পিস্তল ঘরে এল কীভাবে, কার দ্বারা গুলি ছোড়া হল, এবং ঘটনার প্রকৃত পটভূমি কী? পুলিশ তদন্তের অগ্রগতির উপর নির্ভর করেই এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
  • Link to this news (আজকাল)