‘শান্তি ফিরে আসুক’, অশান্ত নেপাল প্রসঙ্গে জানালেন মমতা, সাংবাদিকদের দিলেন এই বিশেষ পরামর্শ...
আজকাল | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরবঙ্গ সফরে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার আগে বিমানবন্দর থেকে নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ির কাছে নেপাল সীমান্ত রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ‘সীমান্তে শান্তি বজায় রাখুন’। নেপালের এই পরিস্থিতির কারণে তার আঁচ পড়েছে ভারতেও। মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানালেন, ‘শান্তি থাক, সবাই ভাল থাক। বিষয়টা কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে। পুরোটাই কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত’। পাশাপাশি, সাংবাদিকদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন তিনি। জানালেন, ‘তোমরা হুট করে চলে যেও না। গেলে পুলিশকে জানিয়ে যেও’। উল্লেখ্য, প্রবল চাপের মুখে নতিস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কেপি শর্মা ওলি। এর আগে সেনার তরফে তাঁকে পদত্যাগের অনুরোধ জানানো হয়েছিল, সূত্রের খবর, সেনা-ই তাঁকে প্রবল বিক্ষোভের মাঝে নতিস্বীকারে বাধ্য করেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে আরও জোরাল হতে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি। কিছুক্ষণ আগেই জানা যায়, গণবিদ্রোহ, মৃত্যুমিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ওলিকে ইস্তফা দিতে বলেছেন নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল! বিক্ষোভের অভিঘাত আঁচ করতে পেরেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি দুবাই যাওয়ার মনস্থির করেছেন। নিরাপদে যাতে দেশ ছাড়া যায় সেই জন্য সেনার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। ওলি চিকিৎসার অজুহাতে দুবাই যাওয়ার কথা ভেবেছেন। বেসরকারি বিমান সংস্থা, হিমালয় এয়ারলাইন্সকে প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্ট্যান্ডবাইতে থাকতে বলা হয়েছে বলেও খবর মিলেছিল। তবে তার ঘণ্টাখানেক পরেই সামনে আসে ওলির পদত্যাগের তথ্য। জরুরি বৈঠক ডেকে সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। সোমের পর মঙ্গল। ক্রমের আঁচ বাড়তে থাকে কাঠমাণ্ডু-সহ নানা জায়গায়। সোমবারে পার্লামেন্টে ঢুকে পড়ার পর, মঙ্গলে বিক্ষোভকারীরা দখল নেয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের।
বিক্ষোভকারীরা নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ডের বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় বলে জানা যায় মঙ্গলবার সকালে। একইসঙ্গে জানা যায়, মঙ্গলবার কাঠমান্ডুতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকারি বাসভবনে গুলি চালানো হয়েছে, তাতে একজন আহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোড়েলের বাসভবনের সামনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। রবিবার থেকেই ক্রমশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে নেপালের। মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের, আহত প্রায় ৩০০ জন, এমনটাই খবর সূত্রে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় সোমবার। দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, গুলি, জলকামান। বেলা যত বাড়ে, ততই লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু সংখ্যা।
পরিস্থিতি বিচারে সোমবার দুপুরেই জানা গিয়েছিল, নেপাল সরকার সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পুনরায় ভাববে। মৃত্যুমিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জেন-জি-দের প্রবল বিক্ষোভের মাঝেই একপ্রকার নতিস্বীকার করে নিয়েছে নেপাল সরকার। সোশ্যাল মিডিয়াগুলির উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে সোমবার গভীর রাতের বৈঠকের পরেই। শুক্রবার থেকে নেপালে ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্স-সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রয়েছে, যার ফলে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার নয়। রবিবার থেকেই ছাত্র যুব, এককথায় জেন-জি-রা পথে। সোমবার বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। অনেকের মতে, কেবল অ্যাপ ব্যান নয়, সামগ্রিকভাবে নেপালের পরিস্থিতি, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, সব মিলিয়েই সামনে এসেছে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ।