বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নেপাল। ব্যাপক জনরোষের মুখে পড়ে ইস্তফা দিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পাশাপাশি, পদত্যাগ করেছেন উপপ্রধানমন্ত্রী-সহ নেপালের আরও ৯ মন্ত্রী। অশান্তি কোথায় গিয়ে থামবে এখনও জানা নেই বলে। এই অবস্থায় ভারতের সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিবেশী দেশে অশান্তির জেরে পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে বন্ধ গাড়ি চলাচল। নেপালে যেতে দেওয়া হচ্ছে না ভারতীয় যানবাহন। সীমান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে কয়েকশো ট্রাক। পানিট্যাঙ্কিতে জারি কড়া সতর্কবার্তা।
সীমান্তে সোমবার দুপুর থেকেই কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। এই মুহূর্তে পরিচয়পত্র পরীক্ষা ছাড়া সীমান্ত পারাপার কার্যত কঠিন হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষদের। শিলিগুড়ি-নেপাল সরকারি বাস পরিষেবাও এই মুহূর্তে বন্ধ রাখা হয়েছে। দার্জিলিংয়ের সান্দাকফু পর্যন্ত নেপাল সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে সিআইএসএফ, র্যাফ। পানিট্যাঙ্কিতেও সীমান্ত সুরক্ষা বলের (এসএসবি) সঙ্গে টহল দিচ্ছে র্যাফ। নেপাল সীমান্তের ভারতীয় ভূখণ্ডে সব ধরনের মিছিল এই মুহূর্তে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদিন সকালে পরিস্থিতি নিয়ে দার্জিলিং পুলিশ সুপারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। নিরাপত্তা, নজরদারি আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
দার্জিলিংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস দাস বলেন, “নেপাল সীমান্ত এলাকা শান্ত, স্বাভাবিক আছে। তবে নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সিআইএসএফ, র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্তের ভারতীয় ভূখণ্ডে সমর্থনে অথবা বিরোধিতায় কোনও ধরনের মিছিল করতে দেওয়া হবে না।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিংয়ের নেপাল সীমান্তের মানেভঞ্জন, সুখিয়াপোখরি, পশুপতি মোড়, সান্দাকফুতে এদিন সকাল থেকে সিআইএসএফ, র্যাফের টহল চলছে। পানিট্যাঙ্কি মোড়ে কড়াকড়িও বাড়ানো হয়েছে। কোনও ভারতীয় যানবাহন নেপালে যাচ্ছে না। নেপাল থেকেও কোনও যানবাহন আসছে না ভারতেও। নেপালে আটকে পড়েছে প্রচুর সংখ্যায় ভারতীয় ট্রাক। অনেক চালক নেপালে ট্রাক ফেলে ফিরে এসেছেন বলে খবর।
সীমান্ত এলাকায় বন্ধ দোকানপাট। শিলিগুড়ি থেকে নেপালে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের একটি বাস চলাচল করে। সেই পরিষেবাও আপাতত বন্ধ করা হয়েছে বলে খবর। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সপ্তাহে দু’দিন শিলিগুড়ি থেকে নেপালে নিগমের বাস চলাচল করত। বিশেষ কিছু কারণে ওই পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।” নেপালের উত্তাল পরিস্থিতিতে সীমান্তে চাপ বাড়তে পারে। এমন আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।