সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাগাভাগি, বিলিবণ্টনেই নাকি আনন্দ প্রসারিত হতে থাকে। ‘বিপুল তরঙ্গ’ ছড়িয়ে পড়ে দূর থেকে সুদূরে। বাঙালির সেরা উৎসব হোক বা অন্য কিছু, আনন্দে ছেয়ে যায় বিশ্ব চরাচর। এমন শুভক্ষণে মন চায় হাতটা বাড়িয়ে অপরকে ছুঁতে, অন্যের ভালো লাগার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে। কিন্তু মন চাইলেই কি আর সব করা যায়? যায় বইকী! শুধু একটু ইচ্ছেশক্তিই আপনার সমস্ত চাওয়াপাওয়া পূরণ করতে পারে। আর তা যে পারে, ‘শের’কে দেখলেই তা বোঝা যায়। বছরের পর বছর ধরে আসলে দুর্গাপুজোর আড়ালে প্রকৃতি পূজা করে থাকে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ সংস্থা ‘শের’। মূল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা কর্ণধার জয়দীপ কুণ্ডু, সুচন্দ্রা কুণ্ডু। সেইসঙ্গে শারদ আনন্দ ভাগ করে নিতে একাধিক সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে থাকেন তাঁরা। এবছর তাঁরা সুন্দরবনের কচিকাঁচাদের কলকাতায় দেবীদর্শন করাবেন। সহযোগিতায় রোটারি ক্লাব অফ বেহালা। এভাবেই সবুজ জঙ্গলের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে ‘কংক্রিট’ জঙ্গলের।
১৬২ বছরে পা রাখছে হাতিবাগানের কুণ্ডুবাড়ির পুজো। এই পুজো সাবেকি হলেও ব্যতিক্রমী বেশ কিছু রীতিনীতি এর বিশেষ আকর্ষণ। তার মধ্যে অন্যতম প্রতিমার ধাঁচ। শারদোৎসবে দুর্গা আসেন সপরিবার ও সিংহবাহিনী নিয়ে। কিন্তু ‘শের’ কর্ণধারের বাড়িতে পূজিত হন ব্যাঘ্রবাহিনী দশভুজা। সারাবছর বাঘ সংরক্ষণের কাজে ব্যস্ত থাকা কুণ্ডু পরিবারে সেটাই স্বাভাবিক। প্রতিমা গড়তে এখানে পরিবেশ বান্ধব রং ব্যবহার করা হয়। পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই রং করেন। দিন দুই আগে সেই কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। এখন কুণ্ডুবাড়িতে দুর্গা আরাধনার ব্যস্ততা তুঙ্গে।
তারই মধ্যে সুন্দরবনের সঙ্গে শহরের মেলবন্ধন ঘটাতে উদ্যোগী তাঁরা। এর জন্য বিশেষ পরিকল্পনা করেছেন ‘শের’ প্রতিষ্ঠাতা জয়দীপ কুণ্ডু ও সদস্যরা।
‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে জয়দীপবাবু জানালেন, ”এবছর আমরা সুন্দরবনের কচিকাঁচাদের কলকাতায় এনে ঠাকুর দেখাব। চতুর্থীতে ওরা ২৫ জন মতো আসবে। সারাদিন দেবীদর্শন হবে। তারপর আবার ওইদিনই ওদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখানকার ভিড়ে ওরা তো বেশিক্ষণ থাকতে পারবে না, প্রকৃতির একটা ব্যাপার আছে। আমাদের সহযোগিতা করবে রোটারি ক্লাব অফ বেহালা।” সুন্দরবনের শিশু-কিশোরদের নিয়েই সারাবছর কাজ করেন জয়দীপ কুণ্ডু, সুচন্দ্রা কুণ্ডু। প্রতি বছর তাঁদের পুজোর উপহার হিসেবে জামাকাপড় দেয় ‘শের’। এবার পুজোয় তাদের কলকাতা ভ্রমণ করানো হবে। এতেই বাড়তি শারদ আনন্দ। হাতিবাগানের কুণ্ডুবাড়িতে এখনই পুজো পুজো গন্ধের সঙ্গে যেন মিশে গিয়েছে বুনো ঘ্রাণ!