সুরের মার্গে যোগ্য বিচরণ নতুন প্রজন্মের, প্রেক্ষাগৃহে মাতোয়ারা রসিকজন
আনন্দবাজার | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সাত সুরের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সমগ্র সঙ্গীত জগৎ। কিন্তু এই সাত সুরের উপর ভর করে কী ভাবে শ্রোতার অন্তরের গভীরে পৌঁছে যাওয়া যায় তা যেন বুঝিয়ে দিল ‘শ্রুতিনন্দন’-এর নতুন প্রজন্ম। শনিবার সকালে উত্তম মঞ্চে বসেছিল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর। অজয় চক্রবর্তীর সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান আয়োজিত ‘ইয়ুথ মিউজ়িক্যাল ফেস্টিভ্যাল’-এ সঙ্গীত পরিবেশন করলেন নতুন প্রজন্মের একঝাঁক শিল্পীরা। দর্শকাসনের সামনের সারিতে বসে সবটা শুনলেন গুরু অজয় চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানের প্রথমেই শ্রীপর্ণা নস্করের কণ্ঠসঙ্গীতে ভরে উঠল প্রেক্ষাগৃহ। টানা আধ ঘণ্টা গাইলেন তিনি। শ্রীপর্ণার পরেই বাঁশি বাজাল কিশোর শিল্পী প্রাঞ্জল ঘটক। জৌনপুরী রাগ বাজাল সে। মাত্র ৬ বছর বয়স থেকে বাঁশি বাজানো শিখেছে প্রাঞ্জল। সঙ্গত করলেন শ্রীকল্যাণ চক্রবর্তী। পরমানন্দ রায়ের কাছে বাঁশির শিক্ষা নিয়েছে প্রাঞ্জল। পাশাপাশি শ্রুতিনন্দন-এরও শিক্ষার্থী সে। তার বাঁশির মূর্ছনায় ভরে যায় শ্রোতার প্রাণ। তার বাজনায় কোনও ভাবেই প্রতিফলন নেই তার বয়সের।
এর পরেই কণ্ঠসঙ্গীত সিদ্ধার্থ পুল্লেরির। কেরলের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ মাত্র ১২ বছর বয়সে সঙ্গীতের টানে চলে আসেন কলকাতায়। সিদ্ধার্থের পরিবারেও রয়েছে সঙ্গীতের আবহ। কলকাতায় এসে কৌশিকী চক্রবর্তী ও পার্থসারথি দেশিকানের কাছে শিক্ষাগ্রহণ করেন তিনি। সিদ্ধার্থের সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন কৌস্তভ ধর। তিনিও মাত্র ১০ বছর বয়স থেকে শ্রুতিনন্দন-এর অংশ। হারমোনিয়ামে গৌরব চট্টোপাধ্যায়, তানপুরায় রিতেশ সর্দার। ভোর রাতের রাগ ভাটিয়ার-এর একটি বন্দিশ পরিবেশন করলেন সিদ্ধার্থ।
তবলা লহরায় ছিলেন অঞ্চিত মাঝি। হারমোনিয়ামে সঙ্গত করলেন শ্রুতিনন্দনের আর এক সদস্য জ্যোতির্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। অঞ্চিতের অনুষ্ঠান শেষে করতালিতে ভরে উঠল প্রেক্ষাগৃহ। লক্ষণীয় বিষয়, অজয় চক্রবর্তী যে শুধু শুনছিলেন তা নয়, তবলার অনুষ্ঠান চলাকালীন তবলা ও তানপুরার শ্রবণ-সংক্রান্ত কিছু অসামঞ্জস্য ধরা পড়তেই তাৎক্ষণিক ভাবে নির্দেশ দিয়ে তা দূর করলেন।
দ্বৈত কণ্ঠসঙ্গীতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন পৃথ্বীশ সেনগুপ্ত ও বিতান দাস। রাগ চারুকেশী গাইলেন তাঁরা। হাবড়ার ছেলে পৃথ্বীশ সেনগুপ্ত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীতে প্রথম হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি শ্রুতিনন্দন-এও গাইছেন। বিতানও মাত্র ১০ বছর বয়স থেকে এই সঙ্গীত শিক্ষাঙ্গনের অংশ। এর পরে শৌনক দাসের সরোদের সুরে মেতে ওঠে প্রেক্ষাগৃহ।