নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ১৫২ ভোটের ব্যবধানে জিতলেন সি পি রাধাকৃষ্ণন। নির্বাচিত হলেন দেশের ১৫তম উপরাষ্ট্রপতি। কয়েকদিনের মধ্যেই শপথ। ১৫টি ভোট বাতিল হয়েছে। মোট ভোট দিয়েছেন ৭৬৭ জন। তবে হার জেনেও মঙ্গলবার যেভাবে সকাল থেকে বিজেপি-বিরোধী শিবির ভোট দেওয়ার জন্য ভিড় করেছিল, তা একপ্রকার নজিরবিহীন। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, ডিএমকের মতো বিজেপি বিরোধী দলের ১০০ শতাংশ সাংসদই এদিন লাইন দিয়ে ভোট দেন। চেষ্টা চলে তাদের প্রার্থী বুচিরেড্ডি সুদর্শন রেড্ডিকে জেতানোর। অথবা কম মার্জিনে হার।
গণনা শেষে জানানো হয়, এনডিএ প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণন পেয়েছেন মোট ৪৫২টি ভোট। শাসক শিবিরের উল্লাসের কারণ তাদের পছন্দের প্রার্থীর ভোট প্রাপ্তি সম্ভাবনার চেয়েও বেশি হয়েছে। মোট ১৫টি ভোট বাতিল। সূত্রে জানা গিয়েছে, বাতিলের কারণ, কেউ কেউ পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে ইংরেজিতে ‘ওয়ান’ লিখেই ক্ষান্ত হননি। সই করেছেন। যার জেরেই বাতিল হয়েছে ভোট। তবে কারা সেই ১৫, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কোনও পক্ষই। কোনও ক্রশ ভোটিং হয়েছে কি না, তা নিয়ে খোঁজখবর করছে সরকার ও বিরোধী দু’ পক্ষই।
নির্বাচিত হওয়ার পর সি পি রাধাকৃষ্ণনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের মন্তব্য, ‘এটা রাধাকৃষ্ণনের জয় ঠিকই। তবে বিজেপির নৈতিক এবং রাজনৈতিক হার।’ কারণ, বিজেডি, বিআরএস, শিরোমণি অকালি দলের মতো তিন দল ভোটদানে বিরত থেকে পরোক্ষে বিজেপি সাহায্য করে দেওয়ার পরেও ব্যাপক ভোটে জিততে পারেননি মোদি-অমিত শাহর প্রার্থী।
জয়ের মার্জিন মাত্র ১৫২। জগদীপ ধনকার ২০২২ সালে ব্যাপক ভোটে জিতেছিলেন। পেয়েছিলেন ৫২৮ ভোট। আর বিরোধীদের প্রার্থী মার্গারেট আলভা পেয়েছিলেন মাত্র ১৮২ ভোট। তৃণমূল অবশ্য গতবার ভোটদানে বিরত ছিল। তবে এবার দলের ৪১ সাংসদই ভোট দিয়েছেন। হুইল চেয়ারে এসেও ভোট দিয়েছেন রাজ্যসভার সদস্য সুব্রত বক্সি। সৌগত রায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ হলেও এসেছিলেন ভোট দিতে। দীপক অধিকারী (দেব) উত্তরবঙ্গে নিজের নতুন ছবি ‘রঘু ডাকাতে’র প্রচার ছেড়ে বাগডোগরা থেকে বিমানে দিল্লি। বিরোধীরা জানতই, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ‘বিবেক ভোট’ হলেও তাদের প্রার্থী জিতবেন না। তবে চেষ্টা ছিল গতবারের মার্জিন কমানো। সেই চেষ্টায় সফল মোদি বিরোধীরা। কিন্তু অশণিসংকেত হল ওয়েইসি ও আপ সহ ইন্ডিয়া জোটের সম্মিলিত ভোট ধরলে ৩০০টির অনেক বেশি ভোট পাওয়া উচিত ছিল। সেটি হয়নি।