রাজীব বর্মন, দেওয়ানহাট: নারীদের উত্তরণের গল্পই ফুটে উঠবে পুজো মণ্ডপে। নারীদের শৃঙ্খল মুক্তির সাফল্য গাঁথা নিয়েই এবারের গোসানি রোড কিশোর সংঘ সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির থিম ‘ইচ্ছে ডানা’। কয়েকমাস ধরে ওই থিমকে ফুটিয়ে তুলতে মণ্ডপ তৈরির কাজ জোরকদমে করে চলেছেন কলকাতা থেকে আসা শিল্পী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সহযোগীরা।
সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে নারীরা। তা সে দারিদ্র্যতা হোক কিংবা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দমিয়ে রাখার প্রবণতা। কোনও কিছুই চলার পথে বাধা হতে পারেনি। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, মহাকাশ থেকে মহাসাগর, বিজ্ঞান থেকে খেলা-সর্বত্রই নারীদের আজ অবাধ বিচরণের সঙ্গে তাঁদের জয় জয়কার। নিজেদের যোগ্যতায় সব ক্ষেত্রেই এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রশাসক থেকে বিজ্ঞান সর্বত্রই নারীদের জয়জয়কার। আর তাই নারীদের সমাজের সেই শৃঙ্খল মুক্তের সাফল্য গাঁথাই পুজো মণ্ডপে ফুটে উঠবে দিনহাটার গোসানি রোড কিশোর সংঘের পুজো মণ্ডপে। আর সেজন্য থিমের নাম ‘ইচ্ছে ডানা’। ৫৮ তম বর্ষে নারীদের উত্তরণের সেই গল্পই তুলে ধরতে কয়েক মাস ধরে মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে।
পুজো মণ্ডপে ঢোকার মুখেই থাকবে ছোটবড় অজস্র ফানুস। সেই ফানুসগুলির নীচে থাকবে নারীর পায়ের ছাপ। যা তুলে ধরবে মেয়েদের ওড়ার কাহিনিকে। থাকবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের প্রতিষ্ঠার পরিচয়। মণ্ডপে ঢুকতেই দেখা মিলবে অনেকগুলি হাত। যার মাধ্যমে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের দমিয়ে রাখার প্রতীক হিসেবে ফুটে উঠবে। মণ্ডপের থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি হচ্ছে প্রতিমাও।
এর আগে গোসানি রোড কিশোর সংঘ কখনও সীমান্তের মানুষের সমস্যা, আবার কখনও বৃদ্ধ মায়ের আর্তনাদের মতো মর্মস্পর্শী থিম করে চমক দিয়েছিল। আর এই পুজো কমিটির সভাপতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ নিজেই। দ্বিতীয়া থেকেই মণ্ডপ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আর এবছরের ভিড় গতবছরের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে বলেই আশাবাদী উদ্যোক্তারা।
মণ্ডপশিল্পী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পারিপার্শ্বিক সমাজ হোক বা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আগ্রাসন কখনই নারীদের ইচ্ছে ডানা মেলার পক্ষে স্থায়ী বাধা দান করতে পারেনি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা শুধু প্রশংসিতই নয়, তাঁরা যে প্রশংসার সঙ্গে কাজ করছেন, তার ছবি তুলে ধরা হবে।
পুজো কমিটির সম্পাদক সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রতিবছর পুজোতে আমরা নতুন নতুন থিমের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরি। নিত্যনতুন থিমে চমক দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এবছর নারীদের শৃঙ্খল মুক্তির জয়গানকেই থিম করা হয়েছে। থিমের নাম ‘ইচ্ছে ডানা’।