প্রতিপদ থেকেই গোসানিমারি কামতেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপুজো
বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: গোসানিমারি কামতেশ্বরী মন্দিরে দেবী কামতেশ্বরীর সারা বছর পুজো হলেও শরৎকালে তিনি দুর্গারূপে পূজিত হন। দুর্গাপুজোর সময় আলাদা করে কোনও মূর্তি তৈরি করা হয় না এখানে। চিরাচরিত পাথরের মূর্তিতেই দেবীর পুজো হয়। মহালয়ার পর প্রতিপদ থেকে কামতেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপুজো শুরু হয়। সাড়ে তিনশো বছর ধরে এভাবেই দুর্গা রূপে পুজো হচ্ছে গোসানিমারি কামতেশ্বরী মন্দিরে।
বর্তমান মন্দিরটি কোচবিহারের মহারাজা প্রাণনারায়ণের আমলে ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। মহালয়ার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো। প্রতিপদ থেকে মূল মন্দিরে দেবীর সিংহাসনের উত্তর দিকে ঘট বসিয়ে পুজো শুরু হয়। এরপর ষষ্ঠীর দিন মন্দির প্রাঙ্গণে থাকা বেল গাছে বেলবরণ হয়। সপ্তমীতে মূল পুজো শুরু হয়। ওই দিন সকালে মাকে ২২টি জায়গার মাটি ও ২২টি জায়গার জল দিয়ে স্নান করানো হয়। প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিদিন জোড়া পায়রা বলি দেওয়ার রীতি। অষ্টমীতে মোষ বলি দেওয়া হয়। এছাড়াও দশমীতে চালকুমড়ো বলি দেওয়ার প্রথা রয়েছে।
দেবী কামতেশ্বরীর পুজোর জন্য সেই সময় বিহারের দ্বারভাঙা থেকে ঝাঁ পরিবারকে নিয়ে আসেন কোচবিহারের মহারাজা। তখন থেকে ঝাঁ পরিবারের সদস্যরা এই পুজো করে আসছেন। সারা বছরই মন্দিরে পুজো হয়। মন্দিরের পুরোহিত প্রিয়তোষ ঝাঁ বলেন, দেবী কামতেশ্বরী কামাখ্যার আরএক রূপ। প্রতিপদ থেকে এই মন্দিরে দুর্গাপুজো শুরু হয়। প্রতিদিনই পায়রা বলি হয়। এছাড়াও প্রতিদিন পুজোতে যে ভোগ দেওয়া হয়, তাতে কোনও লঙ্কার ব্যবহার করা হয় না। গোলমরিচের ব্যবহার হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, পাথরের মূর্তিটিকেই পুজো করা হয়। শুধু কলাবউ আলাদা করে তৈরি করা হয়। বৈদিক রীতি-নীতি মেনে পুজো করা হয়। এমনকী, মূর্তিটির সামনে পুরোহিত ছাড়া আর কেউ যেতে পারেন না। যদিও এর কারণ নিয়ে নানা বিতর্ক আছে। তবে সারাবছরই মায়ের পুজোর সময় পায়রা বলি দেওয়া হয়। মূল মন্দিরের সামনে যে যজ্ঞ ঘর রয়েছে, সপ্তমী থেকে সেখানে যজ্ঞ শুরু হয়। যজ্ঞের আগুন নেভে দশমীতে।