রামপুরহাট স্টেশনে ছিনতাইয়ের কিনারা করতে ধরপাকড়, গ্রেপ্তার চার অভিযুক্ত
বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাট জংশন স্টেশনে ছিনতাইয়ের ঘটনার পর অবশেষে তৎপর রেল পুলিস। ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। তদন্তে নেমেছে জিআরপিও। ১এ প্ল্যাটফর্মে সিসি ক্যামেরা আড়াল করে থাকা গাছটিও কেটে ফেলা হয়েছে। যদিও ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ছিনতাইয়ের কোনও কিনারা করতে পারেনি তারা। যাত্রী নিরাপত্তার ঢিলেঢালা ব্যবস্থা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনায় সরব হয়েছেন যাত্রীরা।
রামপুরহাট জংশনের ১এ প্ল্যাটফর্ম যেন যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও যাত্রীর গলার হার থেকে মানিব্যাগ ছিনতাই হচ্ছে। সোমবার সকালেও রামপুরহাটের বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলা থেকে সোনার হার ছিনিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতী। এরপরই গুরুত্বপূর্ণ এই জংশনের ‘বজ্রআঁটুনি, ফস্কা গেরো’র বিষয়টি সামনে আসে। জানা গিয়েছে, স্টেশনজুড়ে অসংখ্য সিসি ক্যামেরা থাকলেও বেশকিছু বিকল। কিছু ক্যামেরার ছবি অত্যন্ত নিম্নমানের। দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করতে কালঘাম ছুটছে আরপিএফ ও জিআরপির। বাপ্পাদিত্যবাবু ঘটনার পরই আরপিএফ এবং জিআরপিকে বিষয়টি জানান। সেক্ষেত্রে জিআরপির সাফাই, ঘটনাস্থলের কাছাকাছি একটি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু সেটি ঠিকমতো কাজ করছে না। একটি গাছ থাকার ফলে আড়াল হয়ে যাচ্ছে। ফলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীকে শনাক্ত করার কোনও উপায় নেই। যদিও রাতেই জিআরপির পক্ষ থেকে ওই গাছটি কেটে ফেলা হয়। সেইসঙ্গে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে আরপিএফ। এদিন ওই প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেন আসা ও ছাড়ার সময় গেট বরাবর জিআরপি কর্মীরা দাঁড়িয়েছিলেন। উল্টোদিকে কাউকে দাঁড়াতে বা ট্রেনে চাপতে দেওয়া হয়নি।
আরপিএফ ইন্সপেক্টর রণধীর কুমার বলেন, ১এ প্ল্যাটফর্ম থেকে বেশ কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। পরে চারজনকে গ্রেপ্তার করে কেসও দেওয়া হয়েছে। তারা ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত এমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। আমাদের অনুমান, বাইরে থেকে ট্রেনে চেপে এসে অপরাধ ঘটিয়ে ওই ট্রেন ধরে চলে গিয়েছে। খোঁজখবর চলছে। জিআরপি আইসি নিতাইরঞ্জন দাস বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সিসি ক্যামেরা আড়াল করা গাছটি কেটে ফেলে হয়েছে। সেইসঙ্গে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিকল সিসি ক্যামেরাগুলি সারিয়ে তোলার জন্যও বলা হয়েছে।
বাপ্পাদিত্যবাবু বলেন, জিআরপি থেকে রাতে আমাকে ডাকা হয়েছিল। ওরা যে তদন্ত চালাচ্ছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে সেটা জানিয়েছে। তবে ঘটনার কিনারা হবে কিনা জানি না। এই এলাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটক এই স্টেশন হয়ে তীর্থভূমি তারাপীঠে যাতায়াত করেন। যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি রেলের আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কারণ, আমার হার ছিনতাই কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, প্রায়শই এই স্টেশনে ছিনতাই হচ্ছে।