‘হর্ষিণী’র কোলে নবজাতক, পুজোর আগে খুশির হাওয়া ঝাড়গ্রাম জুলজিক্যাল পার্কে
বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: পুজোর আগেই খুশির খবর। জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে চিতাবাঘ হর্ষিনী কয়েকদিন আগেই একটি শাবকের জন্ম দেয়। নবজাতকের আগমনে চিড়িয়াখানায় এখন খুশির হাওয়া। কর্তৃপক্ষের আশা, পুজোর মরশুমে এই জুলজিক্যাল পার্কে হর্ষিনীর শাবককে দেখতেই ঢল নামবে পর্যটকদের। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন,স্বাভাবিক ও কৃত্রিম উপায়ে এখানে বন্য প্রাণদের বাচ্চা জন্মানোর সংখ্যা বাড়ছে। পুজোর আগেই হর্ষিনী একটি শাবকের জন্ম দিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা সবাই উচ্ছ্বসিত। পুজোর সময় এই চিড়িয়াখানায় বহু পর্যটক আসবেন বলে আমরা মনে করছি।
ঝাড়গ্রাম বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হর্ষিনী এনিয়ে তৃতীয়বার সন্তান প্রসব করল। প্রথমবার জন্ম দেওয়া বাচ্চাগুলিকে বাঁচানো যায়নি। দ্বিতীয় বার ওই চিতাটি একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী শাবকের জন্ম দেয়। চিড়িয়াখানায় সদ্যোজাত এই শাবক নিয়ে চিতার সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ। উত্তরবঙ্গ থেকে হর্ষিনী ও সোহেলকে আনা হয়েছিল ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায়। হর্ষিনী ২০২০ সালে প্রথম দু’টি সন্তান প্রসব করে। জন্মানোর পরপরই ওই দুই শাবকের মৃত্যু হয়। কয়েক মাস বাদে হর্ষিনী ফের দু’টি সন্তান প্রসব করে। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আরও তিনটি সন্তান প্রসব করে ওই চিতা। ফলে জুলজিক্যাল পার্কে চিতার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭টি। এরপরেই সোহেল ও তার দুই পুরুষ সন্তান সহ তিনটি পুরুষ চিতাকে উত্তরবঙ্গে পাঠানো হয়। সেইসময় থেকে এই চিড়িয়াখানায় ছিল হর্ষিনী ও তার তিন শাবক। কিন্তু চিতাবাঘ সোহেল উত্তরবঙ্গে চলে যাওয়ার পর হর্ষিনী সঙ্গীহারা হয়ে পড়ে। চলতি বছরের মার্চ মাসে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে উদ্ধার কেন্দ্র থেকে চিতাবাঘ ‘পলাশ’ কে নিয়ে আসা হয়। ফলে হর্ষিনীও তার সঙ্গী পায়। এই চিড়িয়াখানায় সোহেল ও হর্ষিনী পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। হর্ষিনীর সদ্যোজাত শাবকের অবশ্য এখনই দেখা মিলবে না। সতর্ক নজরদারির মধ্যে শাবকটিকে রাখা হয়েছে। এই পার্কে মাসখানেক আগে দশটি কৃত্রিম ময়ূরের বাচ্চার জন্ম হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে গড়ে ওঠা এই জুলজিক্যাল পার্কে নীলগাই, চিতল, সম্বর হরিণ, ভালুক, হায়না, নেকড়ে, চিতা, তারা কচ্ছপ, এমুপাখি, গন্ধগোকুল, সাপ, বাঁদর, হনুমান, বনমুরগি, গোল্ডেন ফিজেট সহ নানা জাতের পাখি রয়েছে। প্রতিবছর ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় গড়ে ২ লক্ষ পর্যটক ঘুরতে আসেন।
পর্যটক টানতে এখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হস্তশিল্পের নানা পণ্য বিক্রির জন্য পার্কের ভিতরে সৃষ্টিশ্রী বিপনণ কেন্দ্র চালু হয়েছে। পার্কজুড়ে গড়া হয়েছে ফুলের বাগানও। রয়েছে পর্যটকদের জন্য বিনোদন পার্ক। পাশাপাশি এদিন ফিশিং বিড়ালও দু’টি বাচ্চার জন্ম দেয়।