দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরে জমা পড়া আবেদনের ৭৮ শতাংশ নিষ্পত্তি
বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরে জমা পড়া আবেদনের ৭৮ শতাংশ নিষ্পত্তি করে ফেলেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির সঙ্গেই এবার দুয়ারে সরকারের শিবির হচ্ছে। জেলার দু’হাজারেরও বেশি বুথে আয়োজিত ৭৫৮টি শিবিরে ইতিমধ্যেই সাড়ে আট লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়েছে। কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগে সংখ্যাটা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রশাসনের আধিকারিকরা দাবি করেছেন। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির কারণেই দুয়ারে সরকারের শিবিরে এবার বেশি লোক সমাগম হচ্ছে বলে প্রশাসন মনে করছে।
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) তথা কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, এখনও পর্যন্ত দুয়ারে সরকারের শিবিরে ১ লক্ষ ৯৪ হাজার ১৮১টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তারমধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৯৩৭টি আবেদনের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যা মোট জমা পড়া আবেদনের শতকরা ৭৭.৯২ শতাংশ। ধারাবাহিক নজরদারির ফলেই আমরা এবার সাফল্য পেয়েছি।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য প্রশাসনকে জেলাস্তরে নামিয়ে আনেন। তিনি জেলায় জেলায় মন্ত্রী-সচিবদের নিয়ে একের পর এক বৈঠক করেন। তাতেও কিছু কিছু ফাঁকফোঁকর থেকে যাচ্ছিল। ফলে জেলা ও ব্লক প্রশাসনকে গ্রাম তথা পাড়ায় নামিয়ে দেন। চালু হয় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। তাতে বহু মানুষ উপকৃত হয়। ভূমি, কৃষি, শ্রম সহ কয়েকটি সরকারি দপ্তরে কাজ করাতে গিয়ে আগে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যেত। নানা অছিলায় এখনও উপভোক্তাদের অযথা হয়রানি করা হয়। কেউ কেউ অবশ্য ‘অন্য উপায়ে’ দ্রুত কাজ হাসিল করিয়ে নেয়। তবে গরিবগুর্বো জঙ্গলমহলবাসীর পক্ষে সবসময় সরকারি কর্মী-আধিকারিকদের ‘খুশি’ করে কাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। দুয়ারে সরকারের শিবিরে জমা পড়া আবেদনপত্র যেহেতু বিনা কারণে ফেলে রাখা যায় না, ফলে কর্মীরা কাজ করতে বাধ্য হন। তাতে উপভোক্তারা ভোগান্তি থেকে রেহাই পান।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার দুয়ারে সরকারের শিবিরে বাঁকুড়ায় বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় সবচেয়ে বেশি ১ লক্ষ ১১ হাজার ৯৯৭ জন আবেদন করেছেন। তারপরেই রয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। ওই প্রকল্পে ২৪৯৩৮টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। ঐক্যশ্রী প্রকল্পে জমা পড়েছে ২১৪৫৪টি আবেদন। এছাড়াও খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষকবন্ধু প্রকল্প, আধার ও ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে গড়ে ৩-৫ হাজার করে আবেদনপত্র জমা পড়েছে। কেসিসি সহ কৃষিদপ্তরের কিছু পরিষেবার ক্ষেত্রে সেভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষাশ্রী ও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মতো প্রকল্পে মাত্র একটি করে আবেদন জমা পড়েছে। মেধাশ্রী সহ কয়েকটি প্রকল্পে একটিও ফর্ম জমা পড়েনি।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সব প্রকল্পে আবেদনের হার সমান হয় না। জনপ্রিয় প্রকল্পগুলিতে বেশি আবেদন জমা পড়ে। সরাসরি অনুদান পাওয়ার প্রকল্পগুলি নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেশি থাকে। ফলে সেগুলিতে বেশি ফর্ম জমা পড়ে। আমরা সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করছি।