• ভাবাদিঘি: বিক্ষোভকারীদের প্রশাসনিক বৈঠকের আর্জি, রাস্তায় দাঁড়িয়েই গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রামকুমার আচার্য, ভাবাদিঘি:

    রেল কাজ শুরু করার আগে বৈঠকের দাবি ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীদের। মঙ্গলবার ভাবাদিঘি গ্রামে ঢোকার মুখে রাস্তাতে দাঁড়িয়েই বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করেন রেল, প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকরা। বেশ কয়েক মিনিট ধরে তাঁদের মধ্যে কথা হয়। তারপর রেলের ইঞ্জিনিয়ার, আধিকারিকরা সেখান থেকে চলে যান। এদিন ভাবাদিঘি সংলগ্ন রেলের অ্যাপ্রোচ অংশে শীঘ্রই কাজ শুরু করার প্রস্তাব জানান রেলের ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, হাই কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি বেরনোর পর প্রশাসনিক বৈঠক করা হোক। তারপর রেলের কাজ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আন্দোলনকারীরা রেলের কাজে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। রেলের ইঞ্জিনিয়াররা আন্দোলনকারীদের এই দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এদিন আরামবাগের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সোমনাথ দত্ত, রেলের দুই ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিৎ হাজারী ও মৃণাল সরকার, গোঘাটের আইসি মধুসূদন পাল প্রমুখ কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। 

    ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, প্রশাসনের তরফে রেলের সঙ্গে সহযোগিতা করা হবে। তবে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা রয়েছে। তার রায়ের প্রতিলিপি এলে গ্রামবাসীদের আর্জি মতো প্রশাসনিক বৈঠক হবে। সেখানে আলোচনা করে তারপর কাজ শুরু হবে বলে এদিন কথা হয়েছে। 

    রেলের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, ভাবাদিঘিতে ব্রিজ তৈরি হবে। তার টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আশা করছি শীঘ্রই কাজ শুরু করতে পারব। এরজন্য আন্দোলনকারীরা খুশি। তার আগে দিঘির দু’ পাশে অ্যাপ্রোচ অংশের কাজ দ্রুত শুরু হবে। হাই কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি এলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তুতিও নেওয়া হবে। 

    ভাবদিঘি বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, আমরা প্রথম থেকেই রেল প্রকল্পের কাজ এগনোর পক্ষে সওয়াল করছি। এদিনও রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় রেলের কাজ শুরুর আগে একটি প্রশাসনিক বৈঠকের আবেদন জানিয়েছি। তাঁরা সেই বৈঠক আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছেন। সেই বৈঠকে আলোচনা করে রেলের কাজ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া ভাবাদিঘিতে কোনও কাজই সম্ভব নয়। 

    উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরে ভাবাদিঘিতে রেলের অসম্পূর্ণ কাজ শুরু হওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। এদিনও রেলের তরফে ইঞ্জিনিয়ারদের আসার সম্ভবনা তৈরি হলে ভাবাদিঘিতে আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। গ্রামে ঢোকার মুখে রাস্তায় আন্দোলনকারীরা জটলা করেন। কিছু সময় পর রেল, মহকুমা প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকরা আসেন। তাঁরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। 

    প্রসঙ্গত, দিঘি বাঁচিয়ে রেল প্রকল্প গড়ার পক্ষে আন্দোলন করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। সম্প্রতি পূর্ব রেল দিঘির উপর ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইমতো আন্দোলনকারীদের সম্মতিতে ভাবাদিঘিতে মাটি পরীক্ষাও করেছে পূর্ব রেল। মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী মাঝে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা ভাবাদিঘি পরিদর্শনও করেছেন। এরপর এদিন ফের সেখানে ভাবাদিঘির ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা হাজির হন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল পথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু হোক।
  • Link to this news (বর্তমান)