জমিদার কালিদাসের বাড়িতে ‘বিষবৃক্ষ’ লেখেন বঙ্কিম, হেরিটেজ ঘোষণার দাবি
বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বারুইপুর:
মজিলপুরের একসময়ের জমিদার ছিলেন কালিদাস দত্ত। তিনি একাধারে ছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ পাশাপাশি সুন্দরবনের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতেন। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বারুইপুর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন ১৮৬৪ সালে দত্তবাড়ি কিছুদিন থাকেন। তখন লিখেছিলেন ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসটির প্রথম ভাগ। সে প্রমাণ এখনও বাড়ির দেওয়ালে রয়েছে। সম্প্রতি দত্তবাড়ি বিক্রি হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্নতত্ত্ববিদ দেবীশঙ্কর মিদ্যা বলেন, এই বাড়ির দেওয়ালে ও দরজায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য আছে। ঘরের মধ্যেও আছে কিছু ভাস্কর্যের অবশেষ। আমরা চাই এ বাড়ি হেরিটেজ হিসেবে রাজ্য সরকার ঘোষণা করুক। সংরক্ষণ করুক। গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করুক। সে কাজ দ্রুত না করলে সুন্দরবনের কিছু ইতিহাস অনাবিষ্কৃত থেকে যাবে। ক্ষতি হবে। জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার এ নিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি দেখব’।
জয়নগর-মজিলপুরের এক নম্বর ওয়ার্ডে কালিদাস দত্তর বাড়ি। মূল বাড়িটি পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। দেবীশঙ্করবাবু বলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ মিউজিয়াম, বেহালা রাজ্য মিউজিয়াম সহ বেশ কয়েকটি সংগ্রহশালায় কালিদাসবাবুর কিছু অমূল্য ভাস্কর্য দান করা হয়েছে। তারপরও কিছু অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু বাড়ি বিক্রি হওয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রত্নবস্তুর অবশিষ্টাংশ স্থানীয়রা নিয়ে চলে যান। কিছু অংশ আবর্জনা মনে করে ফেলেও দেওয়া হয়েছে। এখন কালিদাসের বংশধররা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন। জয়নগর-মজিলপুরের গবেষক লালমোহন ভট্টাচার্য বলেন, কালিদাস দত্ত নিজে ছিলেন ইতিহাসবিদ। জমিদারি সামলে তিনি বিভিন্ন জায়গা ঘুরে প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করতেন। তাঁর বাড়িতে সাহিত্যসম্রাটের আগমন ও বিষবৃক্ষ লেখা ইতিহাসের এক দলিল। সবকিছু রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। রাজ্য সরকার এগিয়ে এলে ইতিহাস বাঁচবে। পুলক বসু নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, দত্ত বাড়ির বৈঠকখানায় বসতেন সাহিত্যসম্রাট। বেলগাছের পিছনের ঘরে বসে লিখেছিলেন বিষবৃক্ষ। সেই বেলগাছটি এখনও আছে। নিজস্ব চিত্র