ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল এসি লোকালের স্টপেজের সংখ্যা বাড়ছে, কোন কোন স্টেশনে দাঁড়াবে?...
আজকাল | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে এসি লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পর যথেষ্টই সাড়া পেয়েছে রেল। গলদঘর্ম হয়ে সাধারণ লোকালে যাওয়ার বদলে যাত্রীরা বেছে নিচ্ছেন এসি লোকালকে। শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট পর্যন্ত প্রথমে একটি এসি লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পর এখন এই ট্রেন চালু হয়েছে অন্য পথেও। আপাতত শিয়ালদহ-রানাঘাট ছাড়াও ট্রেন চলাচল করছে শিয়ালদহ-বনগাঁ-রানাঘাট এবং শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর রুটে। রেল জানিয়েছে, প্রতিটি ট্রেনেই যথেষ্ট পরিমাণে যাত্রীরা যাতায়াত করছেন। তবে চালু হওয়ার পর এসি লোকালগুলি নির্দিষ্ট কিছু স্টপেজে দাঁড়ালেও যাত্রীদের চাহিদা মেনে পরীক্ষামূলকভাবে আরও কয়েকটি স্টেশনে দাঁড় করাবে রেল।
এবিষয়ে রেলের তরফে জানানো হয়েছে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শিয়ালদহ-রানাঘাট এসি লোকাল শ্যামনগর ও বেলঘড়িয়া স্টেশনে দাঁড়াবে। পাশাপাশি শিয়ালদহ-বনগাঁ-রানাঘাট এসি লোকাল দাঁড়াবে চাঁদপাড়া, মছলন্দপুর, অশোকনগর রোড, বিরা এবং বিরাটি জংশন স্টেশনে। আপাতত একমাস ধরে এই স্টেশনগুলিতে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও রেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সাধারণত একবার চালু হয়ে যাওয়ার পর আর সেটা পরিবর্তন হয় না। ফলে ভবিষ্যতেও এই স্টেশনগুলিতে ট্রেনগুলি দাঁড়াবে। নতুন এই স্টপেজের বিষয়ে শিয়ালদহ ডিভিশনের সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, 'যাত্রীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই রেলের তরফে এই স্টেশনগুলিতে এসি লোকাল দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি দেখা যায় এর থেকে রেলের বাণিজ্যিকভাবে লাভ হচ্ছে তবে অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।' তবে আপাতত এই স্টেশনে যাতায়াতের জন্য কোনো মাসিক টিকিটের ব্যবস্থা করছে না রেল। প্রতিদিনের টিকিট কেটেই যাতায়াত করতে হবে।
গত ১০ আগস্ট রাজ্যে এসি লোকাল চালু করা হয়। তবে বাণিজ্যিকভাবে এই ট্রেন যাত্রা শুরু করে ১১ আগস্ট থেকে। প্রতিটি ট্রেনে আছে ১২টি কামরা। সবকটি কামরাই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। ট্রেনের মোট আসনসংখ্যা ১১২৫ হলেও আরামে যাতায়াত করার জন্য যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতেও পিছপা হচ্ছেন না। আর পাঁচটা সাধারণ লোকাল ট্রেনের মতো এই ট্রেনেরও দুটি কামরা মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিটি কামরায় বসানো হয়েছে ৩০ টনের এসি মেসিন। নজরদারির জন্য গোটা ট্রেনটি মোড়া হয়েছে সিসি ক্যামেরায়। বিনা টিকিটে ভ্রমণ আটকাতে প্রত্যেক কামরায় থাকছেন একজন করে টিকিট চেকার। আছে গার্ড ও ট্রেন চালকের সঙ্গে আপৎকালীন প্রয়োজনে কথা বলার জন্য 'টক ব্যাক' সিস্টেম। গোটা ট্রেনের 'বডি' নির্মাণ করা হয়েছে স্টিল বা ইস্পাত দিয়ে।
সম্প্রতি শিয়ালদহ–রানাঘাট শাখায় চালু হয়েছিল এসি লোকাল। তখনই জানা গিয়েছিল আরও ২ টি শাখায় চালু হবে এই বিশেষ ট্রেন। সেই মতো আজ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে বনগাঁ ও কৃষ্ণনগর শাখায় চালু হল এসি লোকাল। শুক্রবার রানাঘাট থেকে বনগাঁয় পৌঁছয় এসি লোকাল। বনগাঁ থেকে রওনা দেয় শিয়ালদহের উদ্দেশে। স্বাভাবিকভাবেই এই ট্রেন নিয়ে যাত্রীদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। একই সঙ্গে শিয়ালদহ কৃষ্ণনগর শাখায়ও ছুটল এসি লোকাল ট্রেন।
শুক্রবার ভোর থেকেই বনগাঁ স্টেশনে এসি লোকালে ওঠার জন্য টিকিট কাউন্টারে ছিল লম্বা লাইন। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, সকাল ৯টা ৪৮ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে এসি লোকালটি ছাড়বে। কৃষ্ণনগরে পৌঁছবে বেলা ১২টা ০৭ মিনিটে। অন্যদিকে, দুপুর দেড়টায় কৃষ্ণনগর থেকে এসি লোকালটি ছেড়ে দুপুর ৩টে ৪০ মিনিটে এসে পৌঁছবে শিয়ালদহে। বনগাঁ শাখার ক্ষেত্রে সকাল ৭টা ১১ মিনিটে রানাঘাট থেকে এসি লোকালটি ছাড়বে। এরপর সকাল ৭টা ৫২ তে সেটি পৌঁছবে বনগাঁ স্টেশনে। আর তারপর ৯টা ৩৭ মিনিটে ট্রেনটি পৌঁছবে শিয়ালদহ স্টেশনে। আবার সন্ধে ৬টা ১৪ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে এসি লোকাল রাত ৮টা ৪ মিনিটে বনগাঁ এবং তারপর ৮টা ৪১ মিনিটে রানাঘাটে পৌঁছবে। বনগাঁ শাখার ক্ষেত্রে শিয়ালদহ থেকে বিধাননগর ও দমদম জংশনের ভাড়া ৩৫ টাকা। শিয়ালদহ থেকে বনগাঁর ভাড়া ১২০ টাকা। শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট পর্যন্ত এসি লোকালে যেতে লাগবে ১৫০ টাকা। শিয়ালদহ–কৃষ্ণনগর রুটে শিয়ালদহ থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত এসি লোকালের ভাড়া ৬০ টাকা। শিয়ালদহ থেকে নৈহাটি পর্যন্ত ভাড়া ৯০ টাকা। শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট পর্যন্ত যেতে ১২০ টাকা আর শিয়ালদহ থেকে কৃষ্ণনগর সিটি জংশন পর্যন্ত যেতে লাগবে ১৪০ টাকা।