‘জট কাটিয়ে শীঘ্রই বাণিজ্য চুক্তি’, মোদির সঙ্গে কথা বলতে চান ট্রাম্প! প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘আমিও অপেক্ষায়’
প্রতিদিন | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ টানাপোড়েন। কূটনৈতিক সংঘাত। দেখা তো দূর, বারবার ফোন করলেও ট্রাম্পের ফোন ধরেননি মোদি। সেই মান-অভিমান পর্ব পেরিয়ে ফের অনুরাগের ছোঁয়া ভারত-মার্কিন সম্পর্কে! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার্তা দিলেন, মোদির সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। শুধু তাই নয়, যে বাণিজ্য চুক্তিকে কেন্দ্র করে এতকিছু। সেই বাণিজ্য চুক্তি শীঘ্রই সম্পন্ন হবে বলে আশ্বস্ত করলেন ট্রাম্প। প্রত্যুত্তরে মোদি জানালেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের জটিলতা কাটাতে রবিবার এক বিবৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ট্রুথে তিনি লেখেন, ‘অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি দীর্ঘ বাণিজ্য জট ছাড়াতে দুই মহান দেশ ভারত ও আমেরিকার মধ্যে আলোচনা চলছে। আমার প্রিয় বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী। আমার বিশ্বাস দুই মহান দেশের এই আলোচনা শীঘ্রই সমস্ত বাধা পেরিয়ে চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছবে।’ এর কিছুক্ষণ পর ট্রাম্পের বয়ানকে সমর্থন জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘ভারত ও আমেরিকা দীর্ঘদিনের বন্ধু ও অংশীদার। আমি নিশ্চিত আমাদের বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের ওপার সম্ভাবনার পথ খুলে দেবে। আমাদের আধিকারিকরা এই চুক্তি সম্পন্ন করতে আলোচনা করছেন। শীঘ্রই তা সম্পন্ন হবে। আমিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার জন্য আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি। আমরা আমাদের দেশের জনগণের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একজোট হয়ে কাজ করব।’
ট্রাম্পের অন্যায্য দাবির কাছে মাথানত না করায় বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়নি দুই দেশের। তার উপর রুশ তেল কেনায় ভারতের উপর রীতিমতো দাদাগিরি শুরু করে আমেরিকা। চাপানো হয় ৫০ শতাংশ শুল্ক। বাণিজ্যচুক্তির কোনও অগ্রগতি না-হলে শুল্ক নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনও আলোচনা করবেন না বলে জানায় হোয়াইট হাউস। পরিস্থিতি যে পথে এগোচ্ছিল তাতে মনে করা হচ্ছিল ভারত-মার্কিন সম্পর্ক এবার উলটো পথে বইবে। বন্ধুর সঙ্গে ‘ঝগড়া’র পর মোদির চিন সফর ও ভারত-রুশ-চিন অক্ষের সম্ভাবনা জোরাল করে। ট্রাম্প সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, চিনের অন্ধকারে ভারতকে হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে সরব হন সে দেশের প্রাক্তন আধিকারিকরা।
গোলমাল টের পেয়েই শেষে ভোলবদলান ট্রাম্প। ভারতকে ‘অন্ধকারে হারিয়ে ফেলা’র ঘণ্টাখানেক পরই ফের ট্রাম্প বন্ধুত্বের হাত বাড়ান। ট্রাম্পের বিবৃতির পালটা সদর্থক বার্তা দেন মোদিও। তৈরি হয় নয়া সম্ভাবনা। এরপর যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমস্ত কিছুর সূত্রপাত, সেই বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও পুরনো বন্ধুত্ব ঝালিয়ে নিতে নতুন করে বার্তা এল ট্রাম্পের তরফে। অতীতে ট্রাম্পের ফোন ধরা বন্ধ করে দিলেও এবার সদর্থক বার্তা দিলেন মোদিও।